শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস জানিয়েছেন পরিস্থিতি যেমনই হোক, নিজের দেশেই থাকবেন।
শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) রাতে ‘ডয়চে ভেলে খালেদ মুহিউদ্দীন জানতে চায়’ অনুষ্ঠানে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন তিনি।
এ অনুষ্ঠানে সঞ্চালক খালেদ মুহিউদ্দীন জানতে চান, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে স্থায়ীভাবে বসবাস ও সামাজিক ব্যবসা পরিচালনার আমন্ত্রণ থাকলেও ড. মুহাম্মদ ইউনূস কেন বাংলাদেশে থাকছেন? জবাবে গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ড. ইউনূস বলেন, ‘তুমি কি বলছো আমি দেশ থেকে চলে যাই? এমন কুসন্তান হলাম আমি যে, আমাকে দেশ ছেড়ে চলে যেতে হবে? আমি এই দেশের সন্তান, এই দেশেই থাকব।’
সামাজিক ব্যবসা ও উদ্যোক্তা হওয়ার বিষয়ে ১২ থেকে ৩৫ বছরের জনগোষ্ঠীকে উৎসাহ দিয়ে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘আমাদের জন্ম হয়েছে চাকরি করার জন্য না। আমরা সবাই উদ্যোক্তা।’
গণতন্ত্র নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা কেউ গণতন্ত্রের বিপক্ষে না, আমরা গণতন্ত্রের পক্ষে, মানবাধিকারের পক্ষে, ন্যায়-নীতির পক্ষে। এগুলো না থাকলে তো জাতি হিসেবে আমরা টিকে থাকবো না।’
তবে মুখ খুলে মানুষ গণতন্ত্রের কথা বলতে পারছে না বলে মনে করেন এই অর্থনীতিবিদ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় তিনি মনে করেন, আমি দেশের সর্বোচ্চ ডাকু, সন্ত্রাসী কিংবা আমি অপরাধী, সেরা চোর। আমাকে বলেন আমি সুদখোর, ঘুষখোর।’
এ সময় কর ফাঁকি দেওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ড. ইউনূস বলেন, ‘আমার টাকা, আমি রোজগার করি, আমি নিজে সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমি মালিক হবো না। যেহেতু আমি মালিক হবো না তাই আমি ট্রাস্টে দিয়ে দিতে চাচ্ছি। আমাদের আইনজীবী বলেছেন, আপনি যেহেতু দান করছেন, এটাতে আর কর দেওয়ার কোনো বিষয় নেই।’
তবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কর দিতে বলার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস কর পরিশোধ করেছেন বলে জানিয়েছেন।
প্রচলিত আইন অনুসারে প্রতিষ্ঠানের লভ্যাংশের ৫ শতাংশ কর্মীদের দেওয়ার বিষয়ে এই বিশ্বব্যক্তিত্ব বলেন, ‘যেখানে মালিক মুনাফা পায় না সেখানে শ্রমিক কিভাবে মুনাফা পাবেন? এই প্রতিষ্ঠানতো মুনাফা তৈরি করে না।’
দেশের টাকা বিদেশে পাচার রোধে সরকারের করণীয় কী হতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা। আইনটা প্রয়োগ করতে হবে। সমস্ত বিষয়টা আইনের ব্যাপার।’
সাম্প্রতিক সময়ে প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস সংবাদ সম্মেলন করে তার প্রতিষ্ঠান জবর দখল হওয়ার কথা জানান।
এই বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা ভয়ের মধ্যে আছি। আমাদের বিল্ডিংয়ের সামনে দলীয় লোকজন সভা করছে। আমরা খুবই সংকটময় অবস্থার মধ্যে আছি।’