বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের নির্বাচনি কোনো ফাঁদে বিএনপি পা দেবে না। বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে আর কোনো নির্বাচন নয়; টালবাহানার মধ্যে আর কোনো ফাঁদে পা দেব না। দেশের গণতান্ত্রিক অন্যান্য রাজনৈতিক দলও প্রহসনের কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না।
বুধবার(৬ জুলাই) জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন’র (জেডআরএফ) উদ্যোগে নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলা সুখারী ইউনিয়নে বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণসামগ্রী বিতরণপূর্ব সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে গয়েশ্বর এসব কথা বলেন।
এ সময় তার সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন – বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ ওয়ারেস আলী মামুন, জেডআরএফ’র ত্রাণ কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোঃ মোর্শেদ হাসান খান, সদস্য সচিব প্রকৌশলী মাহবুব আলম, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. মো. আনোয়ারুল হক ও সদস্য সচিব ড. রফিকুল ইসলাম হিলালি, জেডআরএফের সদস্য প্রকৌশলী মেহেদী হাসান প্রমুখ।
এ সময় উপস্থিত বানভাসী জনগণের উদ্দেশ্যে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আমরা আমাদের সামর্থ্য নিয়ে আপনাদের পাশে দাঁড়িয়েছি। আপনাদের বুঝতে হবে আমরা গত ১৩ বছরের বেশি সময় ধরে আমরা নানান নির্যাতনের শিকার। আপনার এলাকার সন্তান সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর গত ১৪ বছর ধরে কারাগারে। আমাদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে হাজার হাজার মামলা। সরকার আমাদের নিঃস্ব করে দিয়েছে। তারপরও দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল হিসেবে আমাদের নেতা তারেক রহমানের নির্দেশে আপনাদের পাশে দাঁড়িয়েছি।
আপনাদের প্রিয় নেত্রী সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া আজ কারাবন্দি বা গৃহবন্দি উল্লেখ করে তিনি বলেন, আর আপনারা হলেন পানিবন্দি। সুতরাং দেশের নেত্রী যখন গৃহবন্দি থাকে, তখন পানিবন্দি মানুষের অসহায়ত্ব দেখার নেতা থাকে না।
ভুপেন হাজারিকার গাওয়া গানের একটি লাইন তুলে ধরে গয়েশ্বর বলেন, মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য। আওয়ামী লীগ কিন্তু মানুষের জন্য না। আওয়ামী লীগ হচ্ছে লুটপাটকারী, চোরাকারবারী, অর্থ পাচারকারী খুন, নারী ও শিশু ধর্ষণকারী, মুদ্রা ও নারী পাচারকারীদের জন্য। আর বিএনপি হচ্ছে মানুষের জন্য। এ কারণেই বিএনপি মানুষের পাশে আছে, থাকবে।
বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, আপনারা আমাদের জন্য দোয়া করবেন। আমরা আরও শক্তি সামর্থ নিয়ে আপনাদের পাশে যেন থাকতে পারি এবং আপনার আমার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এই লুটপাটকারী সরকারকে যেন বিদায় দিতে পারি।
গয়েশ্বর বলেন, এই মুহূর্তে দেশের ২০ শতাংশ এলাকা বন্যাকবলিত। সবকিছু মিলিয়ে ২০ শতাংশ মানুষ বন্যার দুর্ভোগে রয়েছে। কিন্তু দেশের ১৮ কোটি মানুষ শেখ হাসিনা সরকারের কারণে দুর্ভোগে আছে। এ থেকে আপনাদের মুক্তি পেতে হবে, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে, আপনাদের ভোটের অধিকার আদায় করতে হবে। আপনার ভোট আপনি দিবেন, ভোট কেন্দ্রে গিয়ে নিরাপদে যাকে খুশি তাকে দিবেন। আমাদের আন্দোলন আপনাদের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য। যেদিন আপনাদের নিরাপদ ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারব, সেদিনই আমরা নির্বাচনে যাব।
যে দেশে তেল, গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানির দাম বাড়ে, সেদেশে সব কিছুর দাম বাড়বে এমনই মন্তব্য করে তিনি বলেন, কারণ, এর সঙ্গে উৎপাদন খরচ বেড়ে যায়। এখান থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার একটাই উপায়- আপনাদের ঐক্যবদ্ধ শক্তি।
‘আপনাদের শক্তি আমাদের দলের শক্তি ও দেশের শক্তি। আপনাদের শক্তি ঐক্যবদ্ধ করে এই সরকারকে বিতাড়িত করব। এবং দেশ, দেশের জনগণ এবং দেশনেত্রীকে মুক্ত করব’, যোগ করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য।