গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠু করতে সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণ করে রেখেছে স্থানীয় প্রশাসন। তাছাড়া নির্বাচনী নিরাপত্তায় ১৩ হাজারের বেশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন থাকছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে রয়েছে-পুলিশ, র্যাপিড আ্যকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব), বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী।
গাজীপুর সিটি এলাকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় র্যাব ও আনসার সদস্যদের ৩০টি টিমের পাশাপাশি ১৩ প্লাটুন বিজিবি সদস্য মোতায়েন থাকবে। এছাড়া পুলিশের ১৯টি স্ট্রাইকিং ফোর্স এবং ৫৭টি মোবাইল টিম রয়েছে।
এদিকে ৪৮০টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৩৫১টি ভোটকেন্দ্রকে ঝুঁকিপূর্ণ (গুরুত্বপূর্ণ) বলে চিহ্নিত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ৫৭টি ওয়ার্ডে ভ্রাম্যমাণ টিম থাকবে। এছাড়া ১৯ ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ১৯টি স্ট্রাইকিং ফোর্স ভোটকেন্দ্রে সজাগ থাকবে।
র্যাব-১ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন করতে র্যাবের সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে।
গাজীপুরবাসীকে সুষ্ঠু-সুন্দর নির্বাচন উপহারের আশ্বাস দিয়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) কমিশনার মোল্লা নজরুল ইসলাম বলেন, নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার মাধ্যমে যেন গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের নাগরিকদের সুষ্ঠু-সুন্দর নির্বাচন উপহার দিতে পারি সেটা নিশ্চিত করব। ভোটকেন্দ্রের আশপাশে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর মোবাইল ফোর্স, স্ট্রাইকিং ফোর্স, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট থাকবে। এটা একটা সমন্বিত প্রয়াস। আমরা সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করবো।
তিনি বলেন, আমাদের মূল উদ্দেশ্য একটি সুষ্ঠু নির্বাচন করা। জনগণ আসবে, সুষ্ঠু-সুন্দরভাবে ভোট দিয়ে চলে যাবে। আমরা দেখিয়ে দিতে চাই। পুরো গাজীপুরসহ সারা বিশ্বের লোকজন তাকিয়ে আছে আমাদের দিকে, আমরা যেন একটি ভালো ও সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে পারি।
নির্বাচনী মাঠে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অবস্থান প্রসঙ্গে জিএমপি কমিশনার বলেন, নির্বাচন উপলক্ষে ১৩ হাজারের বেশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। নির্বাচন যেন সুষ্ঠু ও সুন্দর হয় সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। এরই মধ্যে র্যাবের টহল শুরু হয়েছে। কড়া নজরদারিতে রয়েছে পুরো গাজীপুর সিটি করপোরেশন এলাকা।
তিনি বলেন, মোট ৪৮০টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৩৫১টি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। আমাদের কাছে সবগুলো কেন্দ্রই গুরুত্বপূর্ণ। তবে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোকে আলাদাভাবে নজরদারিতে রাখা হচ্ছে।
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রচারণা মঙ্গলবার দিনগত রাত ১২টায় থেকে শেষ হয়েছে। এ নির্বাচন সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এরই মধ্যে ইভিএম মেশিন ও প্রয়োজনীয় সব উপকরণ ভোটকেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। সব কেন্দ্রেই বসানো হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা। নির্বাচনে মেয়র পদে আটজন ও কাউন্সিলর পদে ২৪৮ জন এবং নারী কাউন্সিলর পদে ৭৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
আজ বৃহস্পতিবার (২৫ মে) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) এ ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এতে ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাবেন। এদের মধ্যে ৫ লাখ ৯২ হাজার ৭৬২ জন পুরুষ ও পাঁচ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৬ জন নারী এবং ১৮ জন রয়েছে তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার।