চট্টগ্রাম-৮ (চান্দগাঁও-বোয়ালখালী) আসনের উপনির্বাচনে বেসরকারিভাবে জয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী নোমান আল মাহমুদ। তিনি নৌকা প্রতীকে ৬৭ হাজার ২০৫ ভোট পেয়ে বিপুল ভোটের ব্যবধানে জয় লাভ করেন। আর তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের সেহাব উদ্দিন মুহাম্মদ আব্দুস সামাদ মোমবাতি প্রতীকে পেয়েছেন ৫ হাজার ৮৭ ভোট।
গতকাল বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) রাতে এমএ আজিজ স্টেডিয়ামের পাশে জিমনেসিয়ামে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান এ ফলাফল ঘোষণা করেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে ১৯০টি কেন্দ্রের ১ হাজার ৪১৪টি কক্ষে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। বিরতিহীনভাবে ভোট গ্রহণ চলে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। এরপর ভোট গণনা শেষে ফলাফল ঘোষণা করা হয়। নির্বাচনে ১৪ দশমিক ৫৫ শতাংশ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন।
নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকে নোমান নোমান আল মাহমুদ ছাড়া চেয়ার প্রতীকে ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের সৈয়দ মুহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন, মোমবাতি প্রতীকে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের সেহাব উদ্দিন মুহাম্মদ আব্দুস সামাদ, আম প্রতীকে ন্যাশনাল পিপলস পার্টি- এনপিপির কামাল পাশা এবং একতারা প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী রমজান আলী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
এর আগে নির্বাচনের শুরুতে সকালে নৌকার প্রার্থী নোমান আল মাহমুদ বহদ্দারহাট এখলাছুর রহমান সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোট দেন। এ সময় তিনি জয়ের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তবে মোমবাতি প্রতীকের প্রার্থী বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের স উ ম আব্দুস সামাদ বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে তার নির্বাচনী এজেন্টদের বের করে দেওয়ার অভিযোগ তুলেন।
চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান বলেন, সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণ শেষে ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। নির্বাচন ঘিরে এখনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। পর্যাপ্ত পুলিশ, আনসার ও র্যাব মোতায়েন ছিল। পাশাপাশি জুডিশিয়াল এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করেছেন।
মূলত নির্বাচনে বিএনপি ও জাতীয় পার্টির মত কোনো প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দল অংশ না নেওয়ায় শুরু থেকে নিরুত্তাপ ছিল। কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। জয় নিশ্চিত জেনে ভোটার কাছে গিয়ে তেমন গণসংযোগ করেননি নৌকা প্রতীকের প্রার্থী নোমান আল মাহমুদ। দলীয় মনোনয়ন পেয়েই নেতাকর্মীদের অভিনন্দনের পোস্টার-ব্যানারে ভাসছেন তিনি। অন্যান্য প্রার্থীর গণসংযোগও তেমন দেখা যায়নি।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, এবারের নির্বাচনে পাঁচ লাখ ১৭ হাজার ৬৫২ জন ভোটার ছিল। এদের মধ্যে পুরুষ ভোটার দুই লাখ ৬৩ হাজার ৫৪৩ জন ও নারী ভোটার দুই লাখ ৫৪ হাজার ১০৯ জন।
উল্লেখ্য, গত ৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর একটি হাসপাতালে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সংসদ সদস্য মোছলেম উদ্দিন আহমদ মৃত্যুবরণ করেন। এরপর আসনটি শূন্য ঘোষণা করে সংসদ সচিবালয়। পরে আসনশূন্য ঘোষণার গেজেট ইসিতে এলে নির্বাচনের দিনক্ষণ ঠিক করে কমিশন।