চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে(চবি) মদপান করে মাতলামির সময় ছাত্রলীগের কয়েকজন অনুসারীকে বাধা দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সিনিয়র শিক্ষার্থী। ঘটনা সময় ক্ষমা চেয়ে চলে গেলেও এর জের ধরে এক দিন পর ওই শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা বন্ধুর জন্মদিন পালনকালে মদ খেয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) রেল স্টেশনে মাতলামি করছিলেন। সিনিয়র হিসেবে চবির ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০১০-১১ সেশনের শিক্ষার্থী অভিজিৎ দাশ তাদের এমন অস্বাভাবিক আচরণ করতে নিষেধ করেন।
ঘটনার শুরুতে তর্কে জড়ালেও একপর্যায়ে দুঃখ প্রকাশ করে চলে যান মদ্যপ ছাত্রলীগের এই অনুসারীরা। গত বুধবার (২৪ আগস্ট) রাত ১০টায় চবির রেল স্টেশনে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনার জেরে গতকাল শুক্রবার (২৬ আগস্ট) রাত সাড়ে ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শহরগামী শাটল ট্রেনে মদ্যপানের পর মাতলামিতে বাধা দেওয়া অভিজিৎ দাশকে মারধর করা হয়।
মারধরের শিকার অভিজিৎ দাশ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো রাজনীতির সঙ্গে আমি জড়িত নই। হলেও নয় চবির দুই নম্বর গেট এলাকায় থাকি। ২৪ আগস্ট রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেল স্টেশনে কয়েক শিক্ষার্থী বন্ধুর জন্মদিন পালনের সময় মদ খেয়ে অস্বাভাবিক আচরণ করছিল। আমরা তখন তাদের এমন করতে নিষেধ করেছিলাম। তারা বলল, বন্ধুর জন্মদিন, তাই তারা যা ইচ্ছে করবে। পরে আমি বলেছিলাম, মদ খাও বা যাই কর, নিজেদের মধ্যে কন্ট্রোল থাকা উচিত। একপর্যায়ে তারা ‘সরি’ বলে চলে যায়।’
অভিজিৎ বলেন, শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার ট্রেনে শহরে যাওয়ার সময় আগের ঘটনার জের ধরেই ট্রেন ছাড়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই দ্বিতীয় বগিতে রড, শিকল, পাথর নিয়ে আমার ওপর হামলা চালায়। পরে তারা ফতেয়াবাদ স্টেশনে নেমে যায়। আমি তাদের চিনি। আমি যতটুকু জানি, তারা বগিভিত্তিক উপগ্রুপ সিএফসির অনুসারী।একজনকে শনাক্ত করতে পেরেছি তার নাম তাওহীদ। সে মৃত্তিকাবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী।
তিনি বলেন, তাদের এলোপাতাড়ি মারধরে মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত পেয়েছি। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছি। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ দেব। প্রয়োজনে মামলা করব।
চবি শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি ও সিএফসি গ্রুপের নেতা সাদাফ খান বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত কারা, সেটা আমরা এখনো জানি না। তবে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব। অভিযুক্তরা যদি ছাত্রলীগের পদধারী কেউ হয়, সে ক্ষেত্রে আমরা সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেব।
তিনি বলেন, যদি বগিভিত্তিক কোনো সংগঠনের অনুসারী হয়, সেটার দায়ভার ছাত্রলীগ নেবে না।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া বলেন, আমরা বিষয়টি শুনেছি। অভিযোগ পেলে এবং অভিযুক্তদের শনাক্ত করা গেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।