চীনের দেয়া ঋণের জালে আটকা পড়েছে বিশ্বের মধ্যম আয়ের ২২ টি দেশ। নিজ দেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থাকে টিকিয়ে রাখতে ঝুঁকি নিয়েই ভিনদেশে ঋণ দিয়েছিলো বেইজিং। আর দীর্ঘ সময় পর এসে সেই সুবিধা পুরোদমে আদায় করছে তারা। আর এই তালিকায় আছে বাংলাদেশসহ উন্নয়নশীল ২২ টি দেশ।
স্থানীয় সময় সোমবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উইলিয়াম মেরি কলেজে প্রকাশিত ‘চায়না অ্যাজ অ্যান ইন্টারন্যাশনাল লেনডার অব লাস্ট রিসোর্ট’ প্রতিবেদনে এই দাবি করা হয়েছে।
গবেষণা থেকে জানা যায়, অর্থনৈতিক সংকট কাটিয়ে ওঠার লক্ষ্যে বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভভুক্ত ২২টি উন্নয়নশীল দেশকে এমন জরুরি সাহায্য দেয় চীন। ২০০৮ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত প্রায় ২৪০ বিলিয়ন বা ২৪ হাজার কোটি ডলারের সহায়তা দিয়েছে।
কিন্তু ঋণ নিয়ে ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’র উদ্যোগের স্থাপনা বানানো অনেক দেশের পক্ষেই এখন ঋণ পরিশোধ কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়াচ্ছে। আর এর পুরো ফায়দা নিচ্ছে বেইজিং।
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০১০ সালে চীনের আন্তর্জাতিক জরুরি ঋণ দেওয়ার পরিমাণ ৫ শতাংশ ছিল। কিন্তু সেটি ২০২২ সালের মধ্যে বেড়ে ৬০ শতাংশ হয়েছে।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, চীনের সবচেয়ে বেশি ১১১ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার ঋণ পেয়েছে আর্জেন্টিনা। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪৮ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার পেয়েছে পাকিস্তান। তৃতীয় সর্বোচ্চ ১৫ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার পেয়েছে মিসর।
বিশ্বব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ এবং প্রতিবেদনের অন্যতম গবেষক কার্মেন রেইনহার্ট বলেছেন, ‘বেইজিং মূলত নিজ ব্যাংককে বাঁচাতে চাইছে। এ কারণে তারা জরুরি ঋণ দেওয়ার মতো ঝুঁকিপূর্ণ কাজে যুক্ত হয়েছে।’
চীনের এ সহায়তা পাওয়ার তালিকায় আছে পাকিস্তান, শ্রীলংকা, ভিয়েতনাম, বাংলাদেশ, ইন্দোনেশিয়া, আর্জেন্টিনা এবং মঙ্গোলিয়ার মতো দেশগুলো। এদের প্রায় সকলেই এখন ভুগছে অর্থনৈতিক সংকটে।
সহজ শর্তে ঋণের কথা বলা হলেও এর পেছনে থাকে বড় রকমের ব্যবসায়িক স্বার্থ। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল আইএমএফ যেখানে ২ শতাংশ সুদে ঋণ প্রদান করে, সেখানে চীনের ঋণ পাওয়ার পর গুণতে হয় ৫ শতাংশ সুদ। স্বাভাবিকভাবেই এই সুদের হার বহন করতে গিয়ে বিপাকে পড়ে দেশগুলো।