ঢাকার আদালত প্রাঙ্গণ থেকে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই জঙ্গি ছিনতাইয়ের ঘটনায় জঙ্গি ও তাঁদের সহযোগীদের হামলায় আহত পুলিশ সদস্যকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। ওই পুলিশ সদস্যের নাম নূরে এ আজাদ। এ নিয়ে জঙ্গি ছিনতাইয়ের ঘটনায় ছয় পুলিশ সদস্যকে বরখাস্ত করা হলো।
দায়িত্বে অবহেলার কারণে গতকাল শনিবার তাকে বরখাস্ত করা হয়।
আদালত পুলিশ সূত্র জানায়, ঘটনার পর নূরে এ আজাদকে একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। গতকাল তিনি কাজে যোগ দেয়ার পরপরই তাঁকে বরখাস্ত করা হয়।
এর আগে বরখাস্ত হওয়া পুলিশ সদস্যরা হলেন সিএমএম আদালতের হাজতখানার কোর্ট ইন্সপেক্টর মতিউর রহমান, হাজতখানার ইনচার্জ (পরিদর্শক) নাহিদুর রহমান ভূঁইয়া, আসামিদের আদালতে নেওয়ার দায়িত্বে নিয়োজিত পুলিশের এটিএসআই মহিউদ্দিন, পুলিশ সদস্য শরিফ হাসান ও আবদুস সাত্তার।
উল্লেখ্য, গত ২০ নভেম্বর দুপুরে পুরান ঢাকার জনাকীর্ণ আদালত থেকে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের (আনসারুল্লাহ বাংলা টিম) নেতা মইনুল হাসান শামীম ওরফে সামির ওরফে ইমরান এবং আবু সিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিব ওরফে সাজিদ ওরফে শাহাবকে ছিনিয়ে নিয়ে যায় তাদের সহযোগীরা। তাদের দুজনকেই সেদিন কাশিমপুর কারাগার থেকে আদালতে হাজির করতে ঢাকায় আনা হয়েছিল। সেদিন আদালতে দায়িত্বরত প্রসিকিউশন পুলিশের এক পরিদর্শকসহ পাঁচজনকে ইতোমধ্যে বরখাস্ত করা হয়েছে।
ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত এই দুই জঙ্গি সদস্য জাগৃতি প্রকাশনীর প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপন এবং লেখক ও ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। এই জঙ্গি সংগঠনের নেতা মেজর (বরখাস্ত) সৈয়দ জিয়াউল হক। তাঁর পরিকল্পনায় ২০১৩ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত একাধিক লেখক, প্রকাশক, ব্লগার ও সমকামী অধিকারকর্মীকে হত্যা করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী আইনজীবীর ভাষ্য অনুযায়ী, সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল শুনানি শেষে হাজতখানায় নেওয়ার সময় পুলিশের দিকে ‘স্প্রে মেরে’ তাদেরকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়। ঘটনা তদন্তে ঢাকা মহানগর পুলিশ এবং পুলিশ সদরদপ্তর দুটি তদন্ত কমিটি করেছে। ‘রেড অ্যালার্ট’ জারির পাশাপাশি দুই জঙ্গিকে ধরিয়ে দিতে ঘোষণা করা হয়েছে ১০ লাখ টাকা করে পুরস্কার।
জঙ্গি ছিনতাইয়ের এক সপ্তাহ পার হলেও শামীম ও সোহেলের খোঁজ মেলেনি। ধরা পড়েনি তাদের মূল সহযোগীরা। পুলিশের ভাষ্য, তারা দেশের ভেতরে কোথাও লুকিয়ে থাকতে পারে।
এ ব্যাপারে সিটিটিসির প্রধান ডিআইজি মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ছিনতাইকাণ্ডে অংশ নেওয়া বেশ কয়েকজন জঙ্গিকে আমরা শনাক্ত করেছি। তাদের নাম-পরিচয়ও পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, পালানো দুই জঙ্গি সীমান্ত ডিঙাতে পারেনি।