প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোভিড-১৯ মহামারি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর প্রতি তাদের সহযোগিতা জোরদার করতে বিশ্বব্যাংক ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
সোমবার সকালে বিশ্বব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অ্যাক্সেল ভ্যান ট্রটসেনবার্গ তার কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য লেখক মো. নজরুল ইসলাম।
শেখ হাসিনা বলেন, কোভিড-১৯ শুরু হওয়ার আগে বাংলাদেশ আকর্ষণীয় ৮ শতাংশের বেশি জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছিল। কিন্তু মহামারির কারণে তা হ্রাস পেয়েছে। বাংলাদেশ যখন প্রবৃদ্ধির গতি পুনরুদ্ধার করছিল, তখন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে আবারও আঘাত হানে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলো খাদ্য ও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি সহ অর্থনৈতিক পতনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে।
প্রধানমন্ত্রী সবুজ বলয়, বনায়ন, টেকসই আবাসন এবং জীবিকা তৈরির মাধ্যমে বিরূপ প্রভাব প্রশমিত করার জন্য জলবায়ু ট্রাস্ট ফান্ড থেকে অর্থায়নে গৃহীত প্রকল্পগুলোসহ জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য তার সরকারের পদক্ষেপ এবং প্রচেষ্টার ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছেন।
তিনি বলেন, উন্নত দেশগুলো জলবায়ু পরিবর্তনের দায়িত্ব ভাগ করে নেয়, কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, তারা জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোকে সহায়তা করার প্রতিশ্রুতি পালন করছে না।
বিশ্বব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অবিশ্বাস্য উন্নয়ন যাত্রার প্রশংসা করেন।
বাংলাদেশে মাথাপিছু আয় ছিল ১৯৭২ সালে মাত্র ৫০ মার্কিন ডলার, যা এখন ২৮২৪ মার্কিন ডলার।
বর্তমান প্রেক্ষাপট সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে অ্যাক্সেল ভ্যান ট্রটসেনবার্গ বলেন, কোভিড-১৯ মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট বর্তমান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোতে যুবকদের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের জন্যও কর্মসংস্থান সৃষ্টি প্রয়োজন।
তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংক ১৯৭২ সাল থেকে বাংলাদেশকে সহায়তা করে আসছে এবং দেশের পাশে থাকবে।
বিশ্বব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে বিশ্বব্যাংকের অংশীদারিত্ব জোরদার করতে আমি এখানে এসেছি।
বাংলাদেশের উন্নয়ন সম্পর্কে শেখ হাসিনা বলেন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার ধারাবাহিকতা, রাজনৈতিক ভিশন বাস্তবায়নে সরকারের অক্লান্ত পরিশ্রম এবং জনগণের জন্য কাজ করার ইচ্ছার কারণে গত ১৪ বছরে দেশ দ্রুত উন্নয়ন করেছে।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ডক্টর গওহর রিজভী, অ্যাম্বাসেডর-অ্যাট-লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব এম তোফাজ্জল হোসেন মিয়া এবং অর্থ সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন উপস্থিত ছিলেন।