আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও এরশাদ ২১ বছর দেশকে অন্ধকারে রেখেছিলেন। ১৯৭৫ সালের একটি ষড়যন্ত্রে দেশের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। এই ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হয়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ভুলুণ্ঠিত করা হয়।
বুধবার (৩১ আগস্ট) রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ মুসলিম নিকাহ রেজিস্টার সমিতি এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।
আইনমন্ত্রী বলেন,বাংলাদেশের ভবিষ্যৎকে বদলে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। খুনিদের পুরস্কৃত করা হয়েছিল। আইনের শাসন ধ্বংস করা হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু কখনো ক্ষমতার লোভে রাজনীতি করেননি। তিনি মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দিয়ে দলকে সংগঠিত করেছিলেন। দেশের আনাচে-কানাচে গিয়ে মানুষকে তাদের অধিকার ও স্বাধিকার সম্পর্কে সচেতন করেছেন। তিনি জনগণকে সংগঠিত করে দেশের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ১৯৭২ সালে দেশে ফিরেই বঙ্গবন্ধু যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনে ব্যাপক পরিকল্পনা গ্রহণ করেন এবং তা দ্রুত গতিতে বাস্তবায়ন করতে থাকেন। কিন্তু দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রে এদেশের বেইমান ও বিশ্বাসঘাতক দল তাকে সপরিবারে হত্যা করে। তারা বুঝতে পেরেছিল যে, বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধু অবিচ্ছেদ্য।
এটাকে ভাগ করতে হলে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, কিন্তু বাংলার মানুষ বঙ্গবন্ধুকে ভোলেনি। তার সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার হাতে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার দায়িত্ব দিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১২ সালে কথা দিয়েছিলেন দেশীয় অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করবেন, সেটা করে দিয়েছেন। কথা দিয়েছিলেন ২০২১ সালে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত করবেন, তাও করেছেন। তিনি ২০৪১ সালে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাও নির্মাণ করে দেবেন, ইনশাল্লাহ।
আনিসুল হক বলেন, ষড়যন্ত্র কিন্তু এখনো থেমে নেই। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট শেখ হাসিনাকে গ্রেনেড মেরে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। কোনো সভ্য দেশে কোনো সরকারের অধীনে এত বড় ঘৃণ্য বর্বরোচিত কাজ হতে পারে না, যেটা বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে হয়েছে। শুধু তাই নয়, এ পর্যন্ত ১৯ বার তাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ মুসলিম নিকাহ রেজিস্টার সমিতির সভাপতি কাজি মো. খলিলুর রহমান সরদার। এতে আরও বক্তব্য দেন আইন মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির, নিবন্ধন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক শহিদুল আলম ঝিনুক প্রমুখ।
এ অনুষ্ঠান শেষে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের শিকার বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করা হয়।