28 C
Dhaka
Saturday, November 16, 2024

ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে নিপীড়ন বাড়িয়েছে বাংলাদেশ : দ্য ইকোনমিস্ট

- Advertisement -

ইকোনোমিস্ট প্রতিবেদন: ড. মুহাম্মদ ইউনূস যখন ২০০৬ সালে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন, তখন দেশবাসী এই বিজয়কে রাজপথে উদযাপন করেছিলো। ১৯৮০ এর দশকে ক্ষুদ্র পরিসরে চড়া সুদে দরিদ্রদের জন্য ক্ষুদ্রঋণ প্রবর্তন করেছিলেন ড. ইউনূস। তিনি এই পথের প্রবর্তন করায় বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ মানুষকে দারিদ্রতা থেকে তুলে আনতে সহায়ক হয়েছে। দেশে ও বিদেশে তিনি হয়ে ওঠেন বহুল জনপ্রিয় নাম।

কিন্তু বর্তমানে দেশে বিষয়টি পাল্টে গেছে। বর্তমান বাংলাদেশে তাকে উদযাপন করার চেয়ে বেশি শিকারে পরিণত হতে হয়। এ মাসে দুর্নীতি দমন কমিশনে তাকে নিজের ব্যবসার বিষয়ে প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হবে। তার সহযোগীদের ক্রমবর্ধমান তালিকার সঙ্গে তিনিও দেশত্যাগে বিষেধাজ্ঞার মধ্যে পড়ার ঝুঁকিতে আছেন।

এক দশক ধরে তার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী যে প্রচারণা চালিয়ে আসছেন, সেই ধারাবাহিকতার সর্বশেষ সংযোজন দুর্নীতি দমন কমিশনে ড. ইউনূসকে উপস্থিত হতে সমন জারি। সরকারের দাবি, তাদের লক্ষ্য হলো দুর্নীতির মূলোৎপাটন করা। কিন্তু ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে তদন্ত এই সাক্ষ্য দেয় যে, বাংলাদেশে একনায়কতন্ত্রের উত্থান ঘটছে।

এই একনায়কতন্ত্র দেশের নাগরিক সমাজের জন্য স্থান ক্রমশ সংকুচিত করছে। ড. ইউনূসের পরিণতি এটাই ইঙ্গিত দেয় যে, বাংলাদেশে সামাজিক উদ্যোগ এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। ১৯৭০ এর দশক থেকে শুরু করে পর্যায়ক্রমিক সরকারগুলো উন্নয়নকে এগিয়ে নিতে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের গ্রামীণ ব্যাংকের মতো সংগঠনের কাজগুলোকে গ্রহণ করেছিল। কিন্তু এক পর্যায়ে এসে তারা উদ্বিগ্ন হতে শুরু করে যে, এ ধরনের গ্রুপ নিজেদের মধ্যেই খুব বেশি শক্তি সঞ্চয় করছে।

নরওয়ের একটি ডকুমেন্টারিতে অভিযোগ করা হয়, ড. ইউনূস ১৯৯০ এর দশকে নরওয়ের একটি এইড এজেন্সির ডোনেশন অন্যখাতে স্থানান্তর করেছেন। কিন্তু নরওয়ে সরকার তদন্তে এই অভিযোগের কোনো সত্যতা পায়নি। ওই ডকুমেন্টারি প্রকাশের কমপক্ষে এক দশক আগে ড. ইউনূসের ব্যবসার বিষয়ে তদন্ত শুরু করেন শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী হয়তো এ জন্য উদ্বিগ্ন যে, ড. ইউনূস কার্যকর এক রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হয়ে উঠতে পারেন। কারণ, তিনি ২০০৭ সালে সামরিক শাসনের সময়ে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য রাজনীতিতে এসেছিলেন। এটা সেই সামরিক শাসনের সময়, যারা শেখ হাসিনাকে জেলে পাঠিয়েছিল। ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর অভিযোগ- তিনি ট্যাক্স ফাঁকি দিয়েছেন। গরিবের রক্তচোষা বলে নিন্দিত করেছিলেন এবং গ্রামীণ ব্যাংকের বিরুদ্ধে ড. ইউনূসের ক্ষুদ্রঋণ ব্যবসা, এমনকি তার ব্যক্তিগত আর্থিক বিষয়ে তদন্ত চালু করেন।

শেখ হাসিনা যখন ক্ষমতাকে শক্ত করে আঁকড়ে ধরেন, ড. ইউনূসকে নিয়ে তার সন্দেহ গভীর হয়। ড. ইউনূসের বাধ্যতামূলক অবসরের বয়স ৬০ পেরিয়ে গেছে- এই অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে গ্রামীণ ব্যাংক থেকে ২০১১ সালে সরিয়ে দেয় সরকার। ওই সময় ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বয়স ছিল ৭০ বছর।  তিন বছর পরে এই ব্যাংকের পরিচালনা পরিষদের পুরোটাই দখল করে সরকার। বাংলাদেশি কর্মকর্তাদের দুর্নীতির অভিযোগ উল্লেখ করে বিশ্বব্যাংক ১২০ কোটি ডলার দেয়ার প্রতিশ্রুতি প্রত্যাহার করে। ফলে ২০১২ সালে পদ্মা নদীতে সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা সাময়িক সময়ের জন্য বিচ্যুত হয়।

পরে প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করেন যে, গ্রামীণ ব্যাংক থেকে সরিয়ে দেয়ার কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে ড. ইউনূস যুক্তরাষ্ট্রে তদবির করেছেন, যাতে তারা পদ্মা সেতুতে অর্থ দেয়া থেকে বিশ্বব্যাংককে নিরুৎসাহিত করে।

চীনের সহায়তায় নির্মিত পদ্মা সেতু উদ্বোধনের সময় এ বছরের আরও আগে এই অভিযোগকে দ্বিগুণ করেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশিদেরকে তিনি বলেন যে, ড. ইউনূসকে পদ্মা নদীতে চুবানো উচিত। সরকার বলেছে, বিশ্বব্যাংক কেন এ প্রকল্প থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নিয়েছিল, তার তদন্ত করবে তারা। এর সঙ্গে কোনোভাবে জড়িত থাকার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন ড. ইউনূস।

জুলাই মাসে সরকার আলাদা একটি তদন্ত শুরু করে এই অভিযোগে যে, অলাভজনক প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিকদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা আত্মস্মাৎ করেছেন ড. ইউনূস। গ্রামীণ টেলিকম এবং ড. ইউনূস এ অভিযোগও প্রত্যাখ্যান করেছেন। তখন থেকে এই তদন্ত আরও বিস্তৃত হয়েছে। গ্রামীণ নাম ব্যবহার করে এমন অন্য কোম্পানি এবং সংগঠনের বিরুদ্ধে এই তদন্ত বিস্তৃত হয়েছে। এমনকি বিদেশে আছে এমন কিছু প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধেও তদন্ত হচ্ছে।

২০২৩ সালে বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন। সেই নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক প্রতিযোগিতার বিষয়ে শেখ হাসিনা উদ্বিগ্ন। এ কারণেই তিনি সাম্প্রতিক তদন্ত করাচ্ছেন বলে এর সময়কাল বলে দিচ্ছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মতে, আগস্ট থেকে হাজার হাজার সমালোচক ও বিরোধী দলীয় সদস্যের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগে মামলা করেছে সরকার।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আসিফ নজরুল মনে করেন ড. ইউনূসের আন্তর্জাতিক খ্যাতি প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার জন্য বড় হুমকি হয়ে উঠেছে। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যদি এই শাসকগোষ্ঠীর কোনো বিকল্প খোঁজে তাহলে এই প্রক্রিয়ায় ড. ইউনূস হতে পারেন খুবই গুরুত্বপূর্ণ- যদি তিনি তা চান। কিন্তু ড. ইউনূস ২০০৭ সালে রাজনীতিতে তার নিষ্ক্রিয় পদার্পণের পর এমন কোনো প্রবণতা দেখাননি। তবে শেখ হাসিনা মনে হচ্ছে ঝুঁকি নিতে নারাজ।

- Advertisement -
ফেস দ্যা পিপল লাইভ টক শো উইথ সাইফুর সাগর
Video thumbnail
এই উপদেষ্টাদের কাজের গতি শামুকের গতির চেয়েও খারাপ! উ'ত্তে'জিত হয়ে যে মন্তব্য করলেন কৃষকদল নেতা বাবুল
11:09
Video thumbnail
টকশোতে সার্জিস আলমের হুং’কা’র! রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে দলীয় দলীয় কা’মড়াকা’মড়ি বন্ধ করতে হবে!
08:39
Video thumbnail
এই উপদেষ্টারা থাকলে রাষ্ট্রসংস্কার হবে না! অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিয়ে ক'ঠো'র মন্তব্য রাশেদ খানের!
12:49
Video thumbnail
সিন্ডিকেটগুলোর শুধুমাত্র হাত বদল হয়েছে! রাজনৈতিক দলগুলোর উপর যে ক'ঠোর অভিযোগ তুললেন সার্জিস আলম
08:06
Video thumbnail
সাইফুর সাগরের সামনেই ফেস দ্যা পিপল নিয়ে যে ক'ঠো'র মন্তব্য করলেন সার্জিস আলম!
06:15
Video thumbnail
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কি ১০/১৫ বছর লাগাতার ক্ষমতায় থাকতে চায়? যা বললেন মুহাম্মদ রাশেদ খাঁন
09:00
Video thumbnail
আমাদের ভাইয়েরা শুধুমাত্র একটি নির্বাচনের জন্য রাস্তায় নামেনি জী'বন দিতে! সার্জিস আলম
10:51
Video thumbnail
১০০ দিনের সরকার, যা চেয়েছি তা পেয়েছি? নির্বাচন ও আওয়ামী রাজনীতির পুনঃবাসন!!
01:32:05
Video thumbnail
বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের দুই পক্ষের সং'ঘ'র্ষ! আ'হ'ত ৫ নিয়ে এ কী বললেন সমন্বয়ক ইসমাইল সম্রাট?
09:41
Video thumbnail
এই সরকারের উপদেষ্টাদের কাছে এ কী দাবি জানালেন সমন্বয়ক আশিকুর রহমান অভি?
09:25

সর্বশেষ

আমাদের সাথে সংযুক্ত হোন

1,600,000FansLike
428FollowersFollow
1,270,000SubscribersSubscribe