প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেছেন, ‘নির্বাচন হবে সংবিধান মোতাবেক। বিএনপি যদি এই দাবি মেনে নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেয় তবে তাদের সঙ্গে সংলাপ হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যু উচ্চ আদালত বাতিল করেছে, তাই এটা নিয়ে বিএনপির সঙ্গে কোনো সংলাপ হবে না।’
আজ বুধবার (৫ জুলাই) সকালে নগরীর আগারগাঁও বাংলাদেশ বিনিয়োগ কর্তৃপক্ষ ভবনে সালমান এফ রহমানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে আলোচনা করেন যুক্তরাজ্যের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যবিষয়ক মন্ত্রী নাইজেল হাডলস্টন। পরে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন তারা।
সালমান এফ রহমান বলেন, বাংলাদেশ এবং যুক্তরাজ্যের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক জোরদারের লক্ষ্যে যুক্তরাজ্যের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যবিষয়ক মন্ত্রী নাইজেল হাডলস্টন বাংলাদেশ সফরে এসেছেন। বৈঠকে বাণিজ্য ও ব্যবসা নিয়েই ৯০ শতাংশ কথা হয়েছে। তবে রোহিঙ্গা ইস্যুতে কথা বলার পাশাপাশি রাজনীতির প্রসঙ্গেও আলাপ হয়েছে।
ইউকে একটা অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরাও নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করেছি। সরকার নিরপেক্ষ নির্বাচনে কমিটেড। আমাদের ইসি স্বাধীন। অনেক সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিরপেক্ষ হচ্ছে এটা তার প্রমাণ। সংবিধান মেনেই নির্বাচন হবে এই দাবি তারা মেনে নিয়ে সংলাপে আসলে আমরাও রাজি।’
নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘যুক্তরাজ্য ফ্রি ফেয়ার ইলেকশন চায়, ডায়ালগ চায়; গঠনমূলক সংলাপে প্রস্তুত, নির্বাচন হবে সংবিধান মোতাবেক। কেয়ারটেকার গভর্মেন্ট নিয়ে আলেচনা হবে না। নির্বাচনে অংশগ্রহণ ছাড়া কোনো উপায় নেই, এটা বিরোধী দলের বোঝা দরকার।’
প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা বলেন, রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য রোহিঙ্গা ইস্যু আড়ালে গেলেও তা মরে যায়নি। যুক্তরাজ্যসহ বিশ্বদরবারে এটার দিকে জনমত অব্যাহত রাখা ও মিয়ানমারের ওপর চাপ দেওয়ার প্রচেষ্টা থাকার বিষয়ে কথা বলেছে। তারা রোহিঙ্গাদের জন্য ১১ মিলিয়ন পাউন্ড সহায়তা দেবে।
যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বাণিজ্য সম্প্রসারণ হবে জানিয়ে সালমান এফ রহমান বলেন, যুক্তরাজ্য থেকে এয়ারবাস কিনতে চায় সরকার, এটা নিয়ে কথা হয়েছে। জিএসপির পর ডিসিটিএস স্কিম বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্য বাণিজ্যে নতুন সম্ভাবনা দেখাবে। শুল্ক সুবিধা ঘিরে এর থেকে বড় শিল্পের পাশাপাশি সুবিধা পাবে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তারাও।
যুক্তরাজ্যের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যবিষয়ক মন্ত্রী নাইজেল হাডলস্টন সাংবাদিকদের বলেন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও উভয় দেশের অর্থনীতি বিকাশের লক্ষ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক তৈরিতে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ যুক্তরাজ্য।
ব্রিটিশ বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের একটি দৃঢ় ও স্থায়ী সম্পর্ক রয়েছে। গত এক বছরে দু’দেশের সঙ্গে আমাদের বাণিজ্য উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।
তিনি বলেন, ঢাকায় এটি আমার প্রথম সফর। শক্তিশালী বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক তৈরিতে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করার জন্য যুক্তরাজ্যের দৃঢ় অঙ্গীকার রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যের বাধাগুলো দূর করে পারস্পরিক সমৃদ্ধি বাড়াতে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কাজ করার জন্য আমি উন্মুখ।