দলমত নির্বিশেষে প্রতিটি গৃহহীন নাগরিক বাংলাদেশে একটি করে ঘর পাবে উল্লেখ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার বলেছেন, আমি ‘প্রত্যেক নাগরিকের প্রধানমন্ত্রী’।
তিনি বলেন, ‘দেশটি আমাদের সকলের। আমি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। তার মানে বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিকের দেখাশোনা করা আমার দায়িত্ব।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষের মধ্যে মতামত বা আদর্শের পার্থক্য থাকতে পারে তবে ‘আমি প্রতিটি মানুষকে মানুষ হিসাবে বিবেচনা করি।’
তিনি বলেন, ‘আমি চাই প্রতিটি নাগরিকের একটি সুন্দর জীবন হোক। এটাই আমার পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শিক্ষা।’
তিনি দলমত নির্বিশেষে অন্যান্য রাজনৈতিক দলসহ সকলকে ভূমিহীন ও গৃহহীন আছে কি না সরকারকে জানানোর অনুরোধ করেন যাতে তাদের জন্য ঘরের ব্যবস্থা করতে পারেন।
তিনি বলেন, ‘আমি সমস্ত সরকারি কর্মচারী এবং সমস্ত রাজনৈতিক দলকে যে কোনও ভূমিহীন এবং গৃহহীন লোকদের সম্পর্কে তথ্য দেয়ার জন্য অনুরোধ করছি যাতে আমরা তাদের একটি বাড়ি এবং ঠিকানা দিতে পারি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা তাদের জন্য ঘর তৈরি করব, তাদের একটি ঠিকানা দেব এবং তাদের জন্য জীবিকার ব্যবস্থা করব।’
আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় সারাদেশে ভূমিহীন পরিবারের মধ্যে মোট ২৬ হাজার ২২৯টি ঘর হস্তান্তর করার সময় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন।
এসময় তিনি সরকারের আশ্রয়ণ প্রকল্পের এক যুগান্তকারী অর্জনে পঞ্চগড় ও মাগুরা জেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীন হিসেবে ঘোষণা করেন।
তিনি বলেন, মুজিববর্ষ উপলক্ষে গৃহহীন সকলের আশ্রয় নিশ্চিত করার সরকারের প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবে পঞ্চগড় ও মাগুরার নয়টি উপজেলাসহ বিভিন্ন জেলার মোট ৫২টি উপজেলায় ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার নেই।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাদের দেয়া ঘরগুলো সংরক্ষণ করা সুবিধাভোগীদের দায়িত্ব।
ভূমিহীন ও গৃহহীনদের দেয়া ঘর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এটা নিছক ঘর নয়, এটা আপনার পরিবার ও আপনার পরবর্তী প্রজন্মের আশ্রয়, ঠিকানা ও ভবিষ্যৎ।’
হাসিনা দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, করোনাভাইরাস মহামারি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে রাশিয়ার ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে সরকার সার ও খাদ্য সংগ্রহে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘শুধু বাংলাদেশে নয়, বিশ্বব্যাপী মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়ানো হয়েছে, সারা বিশ্বে খাদ্যের অভাব চলছে, এমনকি উন্নত দেশগুলোতেও এর প্রভাব পড়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, উন্নত দেশগুলোও বিদ্যুৎ ও জ্বালানির সাশ্রয়ে ব্যবস্থা নিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশ বেশ ভালোভাবে চালাচ্ছি, তবে আমাদের এখন থেকে সতর্ক থাকতে হবে। আমরা সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছি।’
তিনি বিদ্যুৎ, পানি, জ্বালানি সাশ্রয় এবং খাদ্য উৎপাদনের জন্য তাদের জমির প্রতিটি ইঞ্চি ব্যবহার করার আহ্বান জানান।
আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের পরিচালক আবু সালেহ মোহাম্মদ ফেরদৌস খান প্রকল্পের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে একটি পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন দেন।
প্রকল্পের ওপর একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়।
পরে প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পঞ্চগড়, মাগুরা, বাগেরহাট, লক্ষ্মীপুর ও ময়মনসিংহের বেশ কয়েকজন উপকারভোগীর সঙ্গে কথা বলেন।