বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, চলমান লোডশেডিংয়ের কারণে সারা দেশে সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যেই বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হবে।
গতকাল সোমবার প্রতিমন্ত্রী তাঁর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে বলেছেন, চলমান তাপদাহ ও লোডশেডিংয়ের কারণে দেশের মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছে, যা কাঙ্ক্ষিত নয়। তবে শিগগিরই জনজীবনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনতে আমরা অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে কাজ করছি…। আশা করছি, সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হবে।
জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী বলেন, লোডশেডিংয়ের পেছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে, যা সবার জানা উচিত। কোভিড-১৯ মহামারির প্রভাব এবং পরবর্তী সময়ে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে আন্তর্জাতিক জ্বালানি বাজারে ভয়াবহ অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে, তা আপনারা সবাই জানেন। গ্যাস, কয়লা, ফার্নেস অয়েলসহ সব ধরনের জ্বালানির দাম আন্তর্জাতিক বাজারে আকাশচুম্বী হয়েছে, এমনকি বাজারে এর প্রাপ্যতাও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে ডলারের বিনিময়হার লাগামহীনভাবে বেড়েছে।
এটি বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য গ্যাস, কয়লা ও ফার্নেস অয়েলের মতো জ্বালানি আমদানিতে প্রভাব ফেলেছে, যার ফলে চলমান লোডশেডিং হচ্ছে বলে জানান তিনি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে সরকার তার আন্তরিক প্রচেষ্টায় দেশের প্রতিটি ঘর বিদ্যুৎ–সুবিধার আওতায় এনেছে। ২০০৮ সালে মাত্র ৪৪ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ পেত, যা এখন শতভাগ।
দেশে বিদ্যুতের আগের পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে নসরুল হামিদ বলেন, তখন দেশবাসী দিনে কমপক্ষে ১৬-১৮ ঘণ্টা লোডশেডিং ভোগ করেছে। বিদ্যুতের চাহিদার কথা মাথায় রেখে আমরা গত এক যুগে বিদ্যুতের উৎপাদন ৫ গুণের বেশি বাড়িয়েছি। বর্তমানে আমাদের বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষমতা প্রায় ২৭ হাজার ৩৬১ মেগাওয়াট (ক্যাপটিভসহ)।
তিনি বলেন, উৎপাদনের ক্ষমতার দিক থেকে বিদ্যুৎ বিভাগে কোনো অভাব নেই। তবে বিশ্বব্যাপী জ্বালানিসংকট এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা বাজারের ব্যাপক ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার কারণে আমরা অপ্রত্যাশিত লোডশেডিংয়ের সম্মুখীন হচ্ছি।
নসরুল হামিদ বলেন, আমি আপনাদের দুর্ভোগের জন্য দুঃখিত। আমি আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই, চলমান পরিস্থিতি সাময়িক। আমরা খুব কম সময়ের মধ্যে একটি ভালো অবস্থানে ফিরে আসতে পারব।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিভিন্ন স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করে বিদ্যুৎ খাতে ব্যাপক উন্নয়ন করেছে। আমি আশা করি, আপনাদের (দেশবাসী) আস্থা ও সমর্থন অব্যাহত থাকবে। এই দুর্ভোগ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব, একসঙ্গে আমরা লাঘব করতে সক্ষম হব।