19 C
Dhaka
Wednesday, December 18, 2024

দেউলিয়ার পথে পাকিস্তানের অর্থনীতি, নেপথ্যে যেসব কারণ

- Advertisement -

চলমান সময়ে অর্থনৈতিক সংকট সারাবিশ্বকেই নাড়া দিয়ে যাচ্ছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এক্ষেত্রে বড় প্রভাবক হিসেবে কাজ করছে। অর্থনীতির এ সংকটে পড়েছে এশিয়ার দেশ পাকিস্তান৷ রাজনৈতিক পরিবর্তনের সাথে পাল্লা দিয়ে পতন ঘটেছে দেশটির অর্থনীতিতেও। অনেকটা দেউলিয়া হতে চলেছে পাকিস্তান। 

পাকিস্তানের দৈনিক দ্য ডনের খবরে বলা হয়, গত ১২ মাসে স্টেট ব্যাংক অফ পাকিস্তানের (এসবিপি) রিজার্ভ ১১.৬ বিলিয়ন ডলার কমেছে। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ ছিল ১৭.৭ বিলিয়ন ডলার; যা এখন ৬.১ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। এ অর্থ দিয়ে এক মাসের আমদানি করতে পারবে পাকিস্তান। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোয় নেট বৈদেশিক রিজার্ভ এখন ৫.৯ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ দেশের মোট তরল বৈদেশিক রিজার্ভ এখন ১২ বিলিয়ন ডলার।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল কখন তার নবম পর্যালোচনা শেষ করবে তা এখনও স্পষ্ট না। এদিকে পাকিস্তানের সাবেক অর্থমন্ত্রী মিফতাহ ইসমাইলসহ বেশ কয়েকজন বিশেষজ্ঞ দাবি করেছেন, এখনও দেউলিয়া হওয়ার ঝুঁকিতে আছে পাকিস্তান।

পাকিস্তান ২০১৯ সালে ৬ বিলিয়ন ডলারে আইএমএফ প্রোগ্রামে প্রবেশ করেছিল৷ চলতি বছরের শুরুতে যা ৭ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছায়। ১.১৮ বিলিয়ন ডলার ছাড়ের জন্য আইএমএফ কর্মকর্তাদের সঙ্গে পাকিস্তান সরকার এখন আলোচনা চালাচ্ছে। এ কারণে প্রোগ্রামটির নবম পর্যালোচনা মুলতুবি রয়েছে।

অনেক স্বাধীন অর্থনীতিবিদদের বিশ্বাস, সরকার আইএমএফের নির্ধারিত প্রাক-প্রয়োজনীয় কর্মক্ষমতা মানদণ্ডে পিছিয়ে পড়েছে। এখন কথা হচ্ছে পাকিস্তানের এই অবস্থার জন্য কোন বিষয়গুলো দায়ী তা আলোচনা যোগ্য।

পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রভাব

পৃথিবীর প্রতিটি দেশের সেনাবাহিনী সে দেশের নিরাপত্তা ও দেশের স্বার্থের কথা চিন্তা করলেও অভিযোগ উঠেছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী শুধুই নিজেদের স্বার্থের কথা ভাবে। রাজনীতি, অর্থনীতি এবং সমাজ ব্যবস্থার প্রতিটি ক্ষেত্রে পাকিস্তান সেনাবাহিনী প্রভাব বিস্তার করেছে। পাকিস্তান তাদের স্বাধীনতার পর থেকেই অনেকবার সামরিক শাসনের মধ্যে দিয়ে গিয়েছে। কোন নির্বাচিত সরকার তাদের পূর্ণ মেয়াদ শেষ করতে পারেনি। এর আগেই হয়তো সামরিক শাসক ক্ষমতা দখল করেন অথবা নতুন কেউ আবার ক্ষমতায় বসেন। দীর্ঘ মেয়াদি কোন সরকার ক্ষমতায় না থাকায় বৈদেশিক কোন বিনিয়োগ পাকিস্তানে করতে চায় না বড় কোম্পানি গুলো।

পাকিস্তানের বাজেটের একটা বড় অংশ প্রতিরক্ষা খাতের জন্য রাখতে হয় কিংবা বলা চলে এ বরাদ্দ রাখতে বাধ্য করে সেনাবাহিনী। কারণ নির্বাচিত সরকার তাদের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য সেনাবাহিনী দিকেই তাকিয়ে থাকতে হয়।

সর্বশেষ ২০২১-২০২২ অর্থবছরেও বাজেটের প্রায় ২৪ শতাংশ রাখতে হয়েছে প্রতিরক্ষা খাতে যা প্রায় ৯.৭ বিলিয়ন ডলার। একটি ভঙ্গুর অর্থনীতির দেশের এটি কতটা বিপদজনক তা বলার অপেক্ষা রাখে না। রাজনৈতিক দলগুলোও সামরিক এই চাপের মুখে দীর্ঘমেয়াদি কোন পরিকল্পনা গ্রহণ করতে পারেনা। রাজনীতিতে অনিশ্চয়তার মুখে পড়ে পাকিস্তানের রাজনীতিবিদরা নিজেদের স্বার্থের দিকেই বেশি ঝুঁকে। এতে করে পাকিস্তানের প্রতিটি  সেক্টরে দুর্নীতি গ্রাস করেছে।

অভ্যন্তরীণ জঙ্গিবাদ

পাকিস্তান রাষ্ট্রে জঙ্গিবাদের ফলে দেশটিতে নেমে আসে বারবার বিপর্যয়। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী গতকাল (৩০ জানুয়ারি ২০২৩) পাকিস্তানের একটি মসজিদে হামলায় প্রায় ৫৯ জনের মানুষ নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ১৭৬ জন।  ২০০৯ সালে লাহোরে শ্রীলঙ্কান ক্রিকেট টিমের উপর বোমা হামলা চালানো হয় এতে করে বিশ্বে পাকিস্তানের নেতিবাচক ভাবমূর্তি তৈরি করে। ২০০৯ সালের পর থেকে কোন দল পাকিস্তানে খেলতে যেতে রাজি হয়নি। এজন্য পাকিস্তানকে ভেন্যু হিসেবে দুবাইয়ের স্টেডিয়াম ভাড়া নিতে হয়, এতে করে পাকিস্তান হারিয়েছে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য পাকিস্তানের অর্থনীতির জন্য একটি সম্ভাবনা হিসেবে বিবেচিত হতে পারত, যেটি পর্যটন শিল্পের জন্য বড় নিয়ামক।

পাশ্ববর্তী দেশ মালদ্বীপ পর্যটন শিল্পের মাধ্যমে তাদের মাথা পিছু আয় ৯ হাজার ডলার ছাড়িয়েছে যা কিনা দক্ষিণ এশিয়ার সর্বোচ্চ। যেই কাশ্মীর ভারতের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র সেই একই কাশ্মীর পাকিস্তানেও বিদ্যামান কিন্তু অভ্যন্তরীণ জঙ্গিবাদ এবং নিরাপত্তার অনিশ্চয়তায় পর্যটকরা পাকিস্তান থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। অভ্যন্তরীণ জঙ্গীবাদের ফলে পাকিস্তানে বৈদেশিক বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ তেমন নেই। তাই অভ্যন্তরীণ জঙ্গিবাদ পাকিস্তানের অর্থনীতির ধ্বংসের বড় কারন হতে পারে।

করোনার প্রভাব

পাকিস্তানের অর্থনীতির মূল যে চালিকা শক্তি তা হচ্ছে রেমিট্যান্স। পাকিস্তান রাষ্ট্রটি বছরে প্রায় ৩৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করে রেমিট্যান্সের  মাধ্যমে। কিন্তু করোনাকালীন সময়ে পাকিস্তানের রেমিট্যান্সের প্রবাহ কমে যায়৷ এতে অর্থনীতিতে ধাক্কা লাগে৷ দেশটি থেকে প্রবাসে থাকা অনেক লোক কর্মহীন হয়ে পড়ে।

ভয়াবহ বন্য

২০২২ সালের শেষের দিকে পাকিস্তানে শুরু হয় ভয়াবহ বন্য। এই বন্যায় পাকিস্তানের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ ভূমি পানির নিচে চলে যায়। এতে প্রচুর পরিমাণে ফসল নষ্ট হয়ে যায়, উৎপাদন ক্ষেত্রেও অনেক বাধাগ্রস্ত হয় দেশের অর্থনীতি। দেশের বহু মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়ে। এবং কৃষি জমি নষ্ট হওয়ার ফলে খাদ্যের সরবরাহও ব্যাপক বাধাগ্রস্ত হয়।

রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা

পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অবস্থা কখনই স্বস্তিদায়ক ছিলো না। কোন দলই খুব দীর্ঘ একটা সময়জুড়ে ক্ষমতায় থাকতে পারেনি। সাম্প্রতিক সময়ে ইমরান খানের সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে প্রধানমন্ত্রী হয়ে আসেন নওয়াজ শরিফ। ইমরান খানের সমর্থকরা ব্যাপকভাবে জ্বালাও পোড়াও আন্দোলন করে যার ফলে উৎপাদন ব্যাবস্থা ব্যাহত হয় এবং দেশের অর্থনীতি হুমকির মুখে পরে।

কামরুল ইসলাম

শিক্ষার্থী লোক প্রশাসন বিভাগ
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়।

- Advertisement -
ফেস দ্যা পিপল লাইভ টক শো উইথ সাইফুর সাগর
Video thumbnail
গুমের শিকার ইউপিডিএফ নেতা মাইকেল চাকমার অভিযোগ: ‘প্রধান অভিযুক্ত খু*নি হাসিনা’!
02:25
Video thumbnail
এবার ভারতীয় মিডিয়া রিপাবলিক টিভির ময়ূখকে এক হাত নিলেন ভারতীয় সাংবাদিক দীপক ব্যাপারী
13:50
Video thumbnail
ইজতেমা ময়দানে সাদপন্থীদের উ*গ্র* তা ও ভয়া *বহ হা ম *লা পরিকল্পিত! নেপথ্যে বেরিয়ে আসছে যাদের নাম !
05:15
Video thumbnail
সাদপন্থীদের উ *গ্র *তা ও ভয়া৮*বহ হা *ম *লা পরিকল্পিত
08:00
Video thumbnail
শিক্ষার্থীদের বি ব স্ত্র করে ভিডিও ভাইরাল করার হু*ম*কি দিতো রিভা!
03:59
Video thumbnail
সা’দপন্থীদের হাতে আ'ট'ক আ'ক্র'ম'ণকারীদের ৩০/৪০ জন! আ'ক্র'ম'ণকারীরা আসলে কোন পন্থী?
14:21
Video thumbnail
ইজতেমা ময়দানের সং'ঘ'র্ষে হাসনাত-সারজিসের সম্পৃক্ততা নিয়ে দুই পক্ষ ফেস দ্যা পিপলে যা জানিয়েছে
10:42
Video thumbnail
টঙ্গী তে ঘটে যাওয়া অপ্রত্যাশিত ঘটনার বাস্তবতা বর্নণা করছেন সারজিস আলম।
05:51
Video thumbnail
ইজতেমার মাঠ নিয়ে পক্ষ-বিপক্ষ! প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন ঘে'রাও নিয়ে প্রশ্নের মুখে সা’দপন্থী মুয়াজ নূর
08:16
Video thumbnail
ওবায়দুল কাদের কার প্রটোকলে ছিল? ভারত নিয়ে চা'ঞ্চ'ল্যকর তথ্য প্রকাশ করলেন মানবাধিকার কর্মী পলাশ
13:23

সর্বশেষ

আমাদের সাথে সংযুক্ত হোন

1,600,000FansLike
428FollowersFollow
1,270,000SubscribersSubscribe