বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মেয়রপ্রার্থী মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীমের ওপর হামলার ঘটনায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের বিতর্কিত সেই মন্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি।
সোমবার (২৬ জুন) এক বিবৃতিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বিতর্কিত সেই মন্তব্যে কেউ মর্মাহত হলে সেজন্য তিনি দুঃখপ্রকাশ করেছেন। একইসাথে তিনি দাবি করেন, তার বক্তব্য ‘বিকৃতভাবে’ গণমাধ্যমে উপস্থাপনের কারণে এ ধরনের ‘ভুল বোঝাবুঝির’ সৃষ্টি হয়েছে
তবে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ বলছে, সিইসি দুঃখ প্রকাশ করে পার পাবেন না। দায়সারা গোছের ক্ষমাপ্রার্থনা করে ঘটনাকে শেষ করতে চেয়েছেন তিনি।
প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দোষ স্বীকার করে ক্ষমাপ্রার্থনার প্রতিক্রিয়ায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সোমবার (২৬ জুন) এক বিবৃতিতে দলটির মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) দোষ স্বীকার করে ক্ষমা চেয়ে পার পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। প্রধান নির্বাচন কমিশনার দোষ স্বীকার করে কেবল ক্ষমাপ্রার্থনা করলেই হবে না। এ ধরনের দায়সারা গোছের ক্ষমাপ্রার্থনা করে ঘটনাকে শেষ করতে চেয়েছেন তিনি। একজন প্রার্থীর মৃত্যু কামনা কীভাবে করলেন? শুধু মৃত্যু কামনা নয়, বরং ফয়জুল করীমকে হত্যার চেষ্টা করেছেন, যা তার বক্তব্যে ফুটে উঠেছে। স্বাধীন স্বার্বভৌম দেশের সাংবিধানিক গুরুত্বপূর্ণ প্রধান নির্বাচন কমিশনার পদে থাকার কোনো যোগ্যতা রাখেন না তিনি।
এদিকে সোমবার ইসির পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সিইসি কখনো ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ দলের মেয়র পদপ্রার্থী মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীমের সুনাম ও সম্মানের হানি ঘটে-এমন কোনো মন্তব্য করেননি। প্রধান নির্বাচন কমিশনার বর্ণিত প্রার্থীর মৃত্যু কামনা করেছেন মর্মে প্রচারিত সংবাদ ও বক্তব্য সম্পূর্ণ অলীক, মনগড়া, অনুমাননির্ভর ও ভ্রান্ত ধারণাপ্রসূত। অসত্য সংবাদ ও বক্তব্য প্রচার ও প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন ও প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিতর্কিত ও অগ্রহণযোগ্য করার অপচেষ্টা করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, গত ১২ জুন বরিশাল সিটি করপোরেশনে ভোটগ্রহণ হয়। ওইদিন মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীমের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। ভোট শেষে ঢাকায় নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেছিলেন, ‘রক্তাক্ত সবকিছু আপেক্ষিক, উনি কি ইন্তেকাল করেছেন? আমরা দেখেছি না, উনি কি কতটা…ওনার রক্তক্ষরণটা দেখিনি। যতটা শুনেছি, ওনাকে কেউ পেছন থেকে ঘুষি মেরেছে।’
সিইসির এই বক্তব্যকে কেন্দ্র করে ব্যাপক সমালোচনা হয়। ‘উনি কি ইন্তেকাল করেছেন’-এমন বক্তব্য প্রত্যাহার করে ক্ষমাপ্রার্থনা, পদত্যাগ ও ৫০০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে সিইসি বরাবর আইনি নোটিশ দেন সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিম। ২২ জুন এই নোটিশ পাঠানো হয়। এরপরই সোমবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সিইসির দুঃখ প্রকাশের কথা জানায় ইসি।