দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের সিন্ডিকেটে সরকার সম্পৃক্ত বলে অভিযোগ করেছেন গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা। তারা বলেন, সরকার দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। তাদের কোনো কিছু করবার ক্ষমতা নেই।
শনিবার (১৮ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর পল্টন মোড়ে এক প্রতিবাদ সমাবেশে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা এ অভিযোগ করেন।
জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহিদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপনের সভাপতিত্বে এবং ছাত্রলীগ (রব) সভাপতি তৌফিক উজ-জামান পীরাচার সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতা সৈয়দ হাসিব উদ্দিন হোসেন, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার প্রমুখ।
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করা সিন্ডিকেটেই ভূত আছে। এই সরকার নিজেই একটা সিন্ডিকেট— ভোট ডাকাতির সিন্ডিকেট, লুটপাটের সিন্ডিকেট, জনগণের ওপরে নির্যাতন করার সিন্ডিকেট। আর তাদের সিন্ডিকেটের শাখা হচ্ছে দ্রব্যমূল্য বাড়িয়ে অথবা সুবিধা মতো জনগণের পকেট কেটে নিজেদের পকেট ভারি করা। আমরা খুব স্পষ্ট কন্ঠেই বলতে চাই, এর বিরুদ্ধে লড়াইটাই চূড়ান্ত।
রোজার মধ্যে বিরাট করে আন্দোলনের কর্মসূচি হয়তো আমরা দেব না জানিয়ে তিনি বলেন, কিন্তু আন্দোলনের এই বাতাসটাকে ধীরে ধীরে আরও বাতাস দিতে থাকব, চাঙ্গা করতে থাকব। যাতে রোজার পর আমরা আমাদের পাওনা কড়ায়গণ্ডয় আদায় করে নিতে পারি, সেই পরিকল্পনা আমরা করছি। আমরা সবার সমর্থন চাই। দেশে-বিদেশে যারা আছেন সবার সমর্থন চাই।
রমজান মাসে গণসংযোগ করার কর্মসূচি ঘোষণা করেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহিদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন। তিনি বলেন, আমরা গণতন্ত্র মঞ্চ থেকে আগামী রমজান মাসে আন্দোলনকে সংগঠিত করার জন্য, বেগবান করার জন্য গণসংযোগ কর্মসূচি, প্রচার-প্রচারণার কর্মসূচি, বৈঠক-কর্মিসভার রাখব। এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট প্রোগ্রাম গণতন্ত্র মঞ্চ থেকে আমরা গণমাধ্যমকে জানিয়ে দেব।
বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, আমাদের তিস্তা থেকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ সরকার ২টা খাল কেটে তারা আবার সেখানে পানি প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রয়োজনীয় অর্থ ইতোমধ্যে বরাদ্দ করা হয়েছে। এতদিন পার হয়ে গেল যে, সরকার এতখানি নতজানু এই পর্যন্ত ভারতের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে একটা সাধারণ প্রতিবাদ করার সাহস পায়নি।শুষ্ক মৌসুমে এমনি তিস্তায় পানি থাকে না।
সরকারপ্রধানের ভারত সফরের সমালোচনা করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী দুই বার ভারত সফর করলেন তিস্তার পানি আনতে পারেন নি। উল্টো ফেনী নদীর পানি প্রত্যাহারে উনি চুক্তি স্বাক্ষর করে এসেছেন। এখন শুনেছি ধরলা নদী থেকে ভারত আবার নতুন করে পানি প্রত্যাহার করবে। এরা (সরকার) বাংলাদেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে আজ আন্তর্জাতিক আদালতে যাওয়ার পরিবর্তে তারা ভারতকে তোয়াজ করছে পানির জন্যে।
তিনি বলেন, মাঝে মধ্যে দিল্লি-কলকাতাতে বেনারসি শাড়ি পাঠায়, আমের সময় আম পাঠায়, ইলিশ মাছের সময় ইলিশ মাস পাঠায়। আমি পরিষ্কার করে বলতে চাই— এসব করে যে কূটনীতি তা নিয়ে বাংলাদেশ পানি আনতে পারেনি। এর বিরুদ্ধে সোচ্চার না হলে আমরা আমাদের দেশ, জনপদ, পানি সম্পদসহ কোনো কিছুকে রক্ষা করতে পারব না।
বাংলাদেশ গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নূর বলেন, আওয়ামী লীগের পাণ্ডারা সুপ্রিমকোর্ট প্রাঙ্গন তচনচ করেছে। সুপ্রিমকোর্ট আর সুপ্রিমকোর্ট নাই। এটা এখন আওয়ামী লীগের দখলে চলে গেছে। এর বিরুদ্ধে আমাদেরকে গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে, এই সরকারের বিরুদ্ধে পাল্টা প্রতিরোধে গড়ে তুলতে হবে।