হজের প্যাকেজ মূল্য পুনঃনির্ধারণ চেয়ে রিটের শুনানির সময় হাইকোর্ট বলেছেন, ধর্ম মন্ত্রণালয় একটি অথর্ব মন্ত্রণালয়। হজে যাওয়ার জন্য যে প্যাকেজ নির্ধারণ করা হয়েছে তা অমানবিক।
একই সঙ্গে হজ যাত্রীদের জন্য সরকারিভাবে যে হজ প্যাকেজ নির্ধারণ করা হয়েছে তা অস্বাভাবিক ও অযৌক্তিক বলেও মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ এমন মন্তব্য করেন। আদালত বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশে হজের জন্য সরকার আলাদা বাজেট রাখে, কিন্তু বাংলাদেশে এটি নেই।
হজের প্যাকেজ মূল্য অনেক বেশি হওয়ায় আমরা হজে যাওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারি না। আর গরিব মানুষরা কীভাবে যাবে। পরে আদালত এ মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য আগামীকাল দিন নির্ধারণ করেন।
এর আগে রোববার (১২ মার্চ) হজের প্যাকেজ মূল্য কমিয়ে পুনরায় প্যাকেজ ঘোষণা করতে রিট দায়ের করা হয়। রিটে বাংলাদেশ বিমান ও সৌদি এয়ারলাইন্স ছাড়াও যেকোনো এয়ারলাইন্সে টিকিট কেটে হজে যাওয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
রোববার (১২ মার্চ) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আশরাফ উজ জামান জনস্বার্থে এই রিট দায়ের করেন।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের রিটে বিবাদী করা হয়েছে।
সম্প্রতি ঘোষিত হজ প্যাকেজের খরচ কমিয়ে ৪ লাখ টাকা নির্ধারণ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে একটি লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন একজন আইনজীবী।
সোমবার (৬ মার্চ) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও আল কোরআন স্টাডি সেন্টারের প্রধান সমন্বয়ক আশরাফ উজ জামান হজের প্যাকেজ কমানোর নির্দেশনা চেয়ে একটি নোটিশ পাঠান। জবাব না পেয়ে তিনি রিট করেছেন।
আইনজীবী আশরাফ উজ জামান ঢাকা মেইলকে বলেছিলেন, আগামী বৃহস্পতিবার আমরা এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে সংবাদ সম্মেলন করব। কারণ অন্যবারের তুলনায় এবারের হজ প্যাকেজে অত্যধিক খরচ বাড়ানো হয়েছে। আমরা চাই বিষয়টি সমাধান হোক।
সরকারি ব্যবস্থাপনায় চলতি মৌসুমে হজের খরচ ৬ লাখ ৮৩ হাজার ১৮ টাকা নির্ধারণ করেছে সরকার। অন্যদিকে কোরবানি ছাড়াই এবার বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রীদের জন্য সর্বনিম্ন প্যাকেজ নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ লাখ ৭২ হাজার ৬১৮ টাকা। এর আগের বছর ছিল ৫ লাখ ২২ হাজার ৭৪৪ টাকা। অর্থাৎ আগের বছরের চেয়ে দেড় লাখ টাকা বেড়েছে।
হজের খরচ এক বছরের ব্যবধানে প্রায় দেড় লাখ টাকা বেড়ে যাওয়া নিয়ে সমালোচনা চলছে বিভিন্ন মহলে। হজের আগাম নিবন্ধনেও এর প্রভাব পড়েছে। অনেকে খরচ বেড়ে যাওয়ায় এবার হজে যাওয়ার ইচ্ছা বাদ দিয়েছেন। কেউ কেউ হজের পরিবর্তে ওমরায় যাচ্ছেন। এই অবস্থায় উকিল নোটিশ পাঠানো হলো।