বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপের সৃষ্টি হচ্ছে। হেমন্তের শুরুতেই হঠাৎ উত্তাল হতে শুরু করেছে সাগর। আবহাওয়া পূর্বাভাস অনুযায়ী লঘুচাপ রূপ নিচ্ছে নিম্নচাপে। বঙ্গোপসাগরে আঘাত হানতে পারে নতুন করে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’।
রবিবার (২২ অক্টোবর) আবহাওয়ার পূর্বাভাস বলছে, এ সপ্তাহ শেষ নাগাদ ঘূর্ণিঝড়টি আঘাত হানতে পারে দেশের উপকূলীয় বিভাগ খুলনা ও বরিশালের কয়েকটি জেলায়।
ঝড়টির তীব্রতা সাধারণ হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও চিংড়ি চাষিদের বিশেষ সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের। হামুনের প্রভাবে ভিজবে দেশের উত্তর-পূর্বাংশ। আবহাওয়া গবেষকরা উপকূলে জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কার কথাও জানিয়েছেন।
কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ বলেন, ২৪, ২৫, ২৬ এবং এর পরবর্তী ৩ দিন খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম, ঢাকা ও সিলেট বিভাগে ভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
এছাড়া ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে দেশের খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট এবং বরিশাল বিভাগের বরগুনা-এসব উপকূলীয় এলাকায় জলোচ্ছ্বাসের উচ্চতা স্বাভাবিকের চেয়ে ৩ থেকে ৫ ফুট, কোনো কোনো স্থানে ৭ ফুট পর্যন্তও হতে পারে।
এ দুর্যোগ থেকে আগাম শীতকালিন সবজি খেত রক্ষায় কৃষকদের বিশেষ সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ উদ্যানতত্ত্ববিদ ড. জসিম উদ্দিনের।
তিনি বলেন, প্রথম কাজ হবে নিষ্কাশন ব্যবস্থা করা। পরে পানি সরে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ছত্রাকনাশক স্প্রে করতে হবে। যাতে গোড়া পচা রোগ না হয়। মাচা শক্ত করে বেঁধে রাখতে হবে। যেন ঘূর্ণিঝড়ের বাতাসে তা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। পেঁপে ও কলাগাছে খুঁটি দিয়ে রাখতে হবে। যাতে ভেঙে না যায়।
এ ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব একইসাথে মৎসখাতেও পড়তে পারে। যেখানে ক্ষতির মুখে পড়তে পারে উপকূলীয় চিংড়ি ঘের ও মৎস্য সম্পদ। তাই লোকসান ঠেকাতে চাষিদের বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
মৎস্য সম্পদ বিশেষজ্ঞ ড. খন্দকার আনিছুল হক বলেন, একটা পথ হলো নেট দিয়ে ঘিরে রাখা। দ্বিতীয়ত, খাবার বেশি দিতে হবে। কারণ, মাছ খেতে পেলে অন্য জায়গায় যায় না। লোনা পানি ঢুকে যেতে পারে। এটি চিংড়ির জন্য উপযুক্ত নয়। ফলে সেটা বের করে স্বাদু পানি ঢোকাতে হবে।
নিম্নচাপটি পুরোপুরি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিলে এর নাম হবে ‘হামুন’। ইরান এ ঘূর্ণিঝড়ের নাম দিয়েছে।