দলের নেতাকর্মীদের হত্যা, গ্রেফতার ও নির্যাতনের প্রতিবাদে রাজধানীর নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়েছে বিএনপি। ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে কেন্দ্রীয়ভাবে আগামীকাল মঙ্গলবার দুপুর ২টায় এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
আজ সোমবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন দলের স্থায়ী কমিটির জ্যেষ্ঠ সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। একই সঙ্গে সারা দেশে এদিন গণমিছিল করবে দলটি।
গত ৭ ডিসেম্বরের পর প্রথমবারের মতো সোমবার নয়াপল্টনের কার্যালয়ে আসেন স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। এ সময় তারা প্রতিটি কক্ষ পরিদর্শন করেন। কক্ষ ভাঙচুর দেখে তারা তীব্র নিন্দা জানান।
সংবাদ সম্মেলনে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘পুলিশ ও আওয়ামী লীগের পেটুয়া বাহিনী নজিরবিহীন বর্বরতা চালিয়েছে বিএনপি অফিসে। ফাইলপত্র ও গুরুত্বপূর্ণ নথি, কম্পিউটার, হার্ডডিস্ক, অর্থ লুট, সব অঙ্গ সংগঠনের অফিস ভাঙচুর এবং জিয়াউর রহমানের ম্যুরাল পর্যন্ত ভেঙে ফেলেছে। ৭ তারিখ অতর্কিত হামলা চালিয়েছে পুলিশ। যেভাবে হামলা চালিয়েছে তা বিশ্বে নজিরবিহীন। নিন্দা করার ভাষা নেই।
পার্টি অফিস থেকে নেতাদের প্রতিবাদ জানিয়ে মোশাররফ বলেন, অফিস থেকে সিনিয়র নেতাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। আরও চারশতাধিক নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হয়েছে। এসব গ্রেফতারের উদ্দেশ্য ছিল ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশ পণ্ড করা।’
তিনি বলেন, ‘প্রতিটি সমাবেশে বাধা দিয়েছে সরকার। তারা কোন ভিত্তিতে এ ঘটনা ঘটালো তা আমাদের হিসাবে মেলে না। তাদের হিসাবে খেলা, কিন্তু বিএনপি এই খেলায় বিশ্বাস করে না। জনগণ বিক্ষুব্ধ, জনগণ রায় দিয়েছে- দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থায় আনা আওয়ামী লীগের পক্ষে সম্ভব না। তারা এই সরকারকে আর চায় না। ৭ ডিসেম্বরের আচরণ প্রমাণ করে এ সরকার গায়ের জোরের সরকার।
তিনি বলেন, আমরা ১০ দফা দিয়েছি। এই ১০ দফাকে সমর্থন করে যারা যুগপৎ আন্দোলন করবে তারাও কর্মসূচি দিয়েছে। নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে ১৩ ডিসেম্বর নয়াপল্টন অফিসের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করবে বিএনপি।’
খন্দকার মোশাররফ আরও বলেন, গতকাল কার্যালয়ে আসতে পেরেছি, কী কী খোয়া গেছে তার তালিকা করছি। তার পর সিদ্ধান্ত নেব কী করব। ১০ ডিসেম্বরে যা প্রত্যাশা করেছিলাম তার থেকে বেশি জনসমাগম হয়েছে। তার পর সরকার যদি এটিকে ব্যর্থ বলে তা হলে কিছু বলার নেই। সরকার দিশাহারা, তারা কোন সময় কী বলবে তা নিয়ে আমরা ভ্রূক্ষেপ করি না। দেশের জনগণও জানে সরকার যা বলে তা করে না।
স্থায়ী কমিটির অপর সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, সরকারের নির্দেশে তাদের দলের কর্মীরা ১০ তারিখ ঘিরে এমন কোনো অপকর্ম নেই যে করেনি। আতঙ্কিত করছে সরকার, আর বিএনপি শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করে দেখিয়ে দিয়েছে। আমরা গণতান্ত্রিক আন্দোলন গণতান্ত্রিকভাবে করব এবং এই সরকারকে বিদায় জানাব।’
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, সাংগঠনিক সম্পাদক এমরান সালেহ প্রিন্স।