রাশিয়ার বিরোধীদলীয় নেতা অ্যালেক্সি নাভালনি কারাবান্দী অবস্থায় শুক্রবার মারা গেছেন। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কঠোর সমালোচক ছিলেন এই নেতা। নাভালনির মৃত্যুর জন্য পুতিন ও তার সরকারকে দায়ী করেছেন দেশটির ভিন্ন মতাবলম্বী ব্যক্তি ও পশ্চিমা দেশগুলো।
শান্তিতে নোবেলজয়ী রাশিয়ার নাগরিক দিমিত্রি মুরাতোভ বলেছেন, নাভালনিকে তিন বছর ধরে নির্যাতন ও যন্ত্রণা দেওয়া হয়েছে।
জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ বলেন, জীবন দিয়ে তিনি নিজের সাহসের প্রতিদান দিয়ে গেলেন।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক বলেন, নাভালনির মৃত্যু রাশিয়ার জনগণের জন্য এক বিরাট ধাক্কা।
যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস বলেছেন, তারা (রুশ কর্তৃপক্ষ) যে গল্পই বলুক না কেন, রাশিয়াই এর জন্য দায়ী।
তবে, স্থানীয় কারা কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে বলেছে, নাভালনি শুক্রবার হাঁটাহাটি করার পর অসুস্থ বোধ করেন। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই তিনি জ্ঞান হারান। তখন জরুরিভাবে চিকিৎসক দলকে ডেকে আনা হয়। তারা নাভালনিকে ফেরানোর সব চেষ্টা করলেও তাতে কোনো ফল আসেনি। তার মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
গত এক দশকে রাশিয়ায় বিরোধী নেতা হিসেবে বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে বেশি পরিচিত মুখ হয়ে উঠেছিলেন ৪৭ বছর বয়সী নাভালনি। রাশিয়ার সাইবেরিয়া অঞ্চলের একটি কারাগারে বন্দী রাখা হয়েছিল তাকে।
নাভালনিকে সর্বশেষ দেখা গিয়েছিল গত বৃহস্পতিবার। কারাগার থেকে ভিডিও লিঙ্কের মাধ্যমে আদালতের শুনানিতে বক্তব্য দেন তিনি। সে সময় তাকে হাস্যোজ্জ্বল ও মজা করতে দেখা যায়।
নাভালনির মা লুদমিলা নাভালনিয়া আজ ছেলের মৃত্যু সংবাদ পাওয়ার পর এক ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘আমি কোনো সমবেদনা শুনতে চাই না। আমরা গত ১২ (ফেব্রুয়ারি) তাকে কারাগারে দেখেছিলাম। সে প্রাণবন্ত, সুস্থ ও সুখী ছিল।’
পুতিনের সমালোচকদের অধিকাংশই রাশিয়া ছেড়ে গেছেন। কিন্তু নাভালনি নিশ্চিত কারাবাস হবে জেনেও জার্মানিতে কয়েক মাস চিকিৎসা নিয়ে ২০২১ সালের জানুয়ারিতে দেশে ফেরেন। এর আগের বছর আগস্টে তার শরীরে ‘নোভিচোক’ নামের বিষ প্রয়োগ করা হয়েছিল।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাশিয়ায় এক দশকের বেশি সময় রাজপথে আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন নাভালনি। পুতিন প্রশাসনের দুর্নীতির তথ্য নিজের ইউটিউব চ্যানেলে তুলে ধরেন তিনি। কোটি কোটি মানুষ তা দেখেন এবং হাজার হাজার মানুষ রাজপথে নেমে এসেছিলেন।