বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা ও সরকারের পদত্যাগের দাবিতে দেশব্যাপী পদযাত্রা কর্মসূচির অংশ হিসেবে নারায়ণগঞ্জের কাচঁপুরে বিএনপির নেতাকর্মীরা মহাসড়কে অবস্থান নেওয়ার চেষ্টা করলে বিএনপি-পুলিশের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এতে যুবদলের কর্মী আলামিন মোল্লা গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এছাড়া দফায় দফায় চলা এই সংঘর্ষে অন্তত দশজন আহত হয়েছেন বলে জানা যায়।
শনিবার (১৯ আগস্ট) বিকেলে চারটার দিকে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় উভয় পক্ষের সংঘর্ষে ঢাকা-সিলেট ও ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কে প্রায় আধ ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীসূত্রে জানা যায়, বিএনপির কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে শনিবার জেলায় জেলায় ছিল বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচি। বিকেল ৩টা থেকে কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপু, জেলা বিএনপির সেক্রেটারি গোলাম ফারুক খোকনসহ সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে কাঁচপুরে জড়ো হতে শুরু করেন। বিএনপির নেতাকর্মীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে ঢাকা-সিলেট ও ঢাকা- চট্টগ্রাম মহাসড়ক দিয়ে ঢাকায় প্রবেশের মূল পয়েন্ট কাঁচপুর ওভারপাসের নিচে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। এসময় বিভিন্ন পাড়া মহল্লা থেকে আসা বিএনপির কয়েকশ’ নেতাকর্মী রাস্তায় অবস্থান নিলে মহাসড়কে যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়। পুলিশ তাদের রাস্তা ছেড়ে দিয়ে ফাঁকা জায়গায় যেতে অনুরোধ করে। কিন্তু বিএনপির নেতাকর্মীরা পুলিশের অনুরোধ উপেক্ষা করে রাস্তায় অবস্থান নেয় তারা। এ নিয়ে পুলিশ ও বিএনপির নেতা কর্মীদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে বিএনপি নেতাকর্মীরা লাঠিসোটা নিয়ে পুলিশের ওপর ইটপাটকেল ছুড়তে থাকলে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। প্রায় আধ ঘণ্টাব্যাপী ধাওয়া পাল্টার সময় পুলিশ বেশ কয়েকটি টিয়ার সেল ও ফাঁকা রাবার বুলেট ছুড়ে। এতে বিএনপি নেতাকর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।
এ প্রসঙ্গে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব গোলাম ফারুক খোকন জানান, আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে ছিলাম। পুলিশ প্রথমে আমাদের কর্মসূচিতে বাঁধা দেয়। পরে তারা আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর ব্যাপক লাঠিচার্জ শুরু করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পুলিশের কাঁদানো গ্যাসে আমাদের সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরূল ইসলাম আজাদসহ অন্তত পাঁচ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
এ বিষয়ে জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ বিল্লাল হোসেন বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীরা ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক বন্ধ করে পদযাত্রার জন্য জড়ো হয়। এসময় পুলিশ তাদের রাস্তা ছেড়ে দেয়ার অনুরোধ করলে উল্টো পুলিশের ওপর হামলা করে বিএনপির নেতাকর্মীরা। ককটেল বিস্ফোরণ করে। পরে পুলিশ মহাসড়কের যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখতে বিএনপির নেতাকর্মীদের ধাওয়া দিয়ে এবং বেশ কয়েক রাউন্ড টিয়ারসেল ছুঁড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
তিনি বলেন, এসময় বিএনপির নেতাকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ব্যাপক পরিমাণে ইটপাটকলে নিক্ষেপ করে। তাদের ইটপাটকেল নিক্ষেপের কারণে বেশ কয়েকটি যানবাহনের জানালার কাঁচ ভেঙে যায়।