কুবি প্রতিনিধি
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) আইন বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী শাকিল আহমেদ সবুজকে অপহরণের ঘটনা ঘটার পর শিক্ষার্থীরা নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন। এই ঘটনায় তাদের শঙ্কা বেড়েছে এবং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ চারটি দাবি তুলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেছে তারা।
রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) দুপুর দেড়টার দিকে একদল শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং উপ-উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি জমা দেয়।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, গত ৩০ জানুয়ারি কুবির আইন বিভাগের শিক্ষার্থী শাকিল আহমেদ সবুজকে অপহরণ করা হয়। অপহরণের সময় তার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয় এবং মুক্তিপণের জন্য তার পরিবারকে চাপ দেয়া হয়। পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সহযোগিতায় পাঁচ ঘণ্টা পর কুমিল্লা শহরের একটি দোকান থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। তবে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কোনো সহায়তা পাওয়া যায়নি।
এই ঘটনায় শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চারটি দাবি তুলেছেন। দাবিগুলো হলো—
শহরে আসা-যাওয়া শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং বিপদে পড়া শিক্ষার্থীদের তৎক্ষণাৎ সাহায্য করার জন্য ‘র্যাপিড একশন সেল’ গঠন করতে হবে।
ছাত্রদের বিভিন্ন সমস্যায় (যেমন: ছিনতাই, অপহরণ ইত্যাদি) প্রশাসনকে বাদী হয়ে মামলা করতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশে পার্ক বা পিকনিক স্পটে আসা বাস বা গাড়িগুলো বেপরোয়া আচরণ করে। এসব গাড়ির কারণে নিরাপত্তাহীনতা বেড়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে, স্পিডব্রেকারের ব্যবস্থা করতে এবং শিক্ষার্থীদের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষায় স্থানীয় প্রশাসনের সাথে যৌথ উদ্যোগে পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।
ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে বহিরাগতদের অবাধ চলাচল নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মুহসিন জামিল বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আমরা আজ স্মারকলিপি দিয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশে এবং কুমিল্লা শহরে যাতায়াতে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব। সবুজের সাথে যা ঘটেছে, তা যে কোনো সময় অন্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গেও ঘটতে পারে। বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক মেয়ে শিক্ষার্থী শহরে টিউশনি করেন, তাদের জন্যও নিরাপত্তা ঝুঁকি রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায়ও অনেক সময় মেয়ে শিক্ষার্থীরা হেনস্তার শিকার হন। এসব বিষয় মাথায় রেখে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আরো সক্রিয় হতে হবে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাসুদা কামাল বলেন, “আমরা স্মারকলিপি হাতে পেয়েছি এবং শিক্ষার্থীদের দাবি যৌক্তিক। আমরা এ বিষয়ে প্রশাসনিকভাবে আলোচনা করব।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বলেন, “আমরা স্মারকলিপি পেয়েছি এবং এটি নিয়ে আলোচনা করতে বসব। নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এককভাবে সম্ভব নয়, এর জন্য একটি প্রশাসনিক কাঠামো প্রয়োজন। সকালে আমরা এ বিষয়ে আলোচনা করব এবং প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করব।”