কক্সবাজার ও বান্দরবানে পাহাড় ধসে ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার বিকেলে উখিয়া ও চকরিয়া এলাকায় পৃথক পাহাড় ধসের ঘটনায় ৩ শিশুসহ ৪ জন মারা যায়। বান্দরবানের আলীকদম উপজেলায় দুপুরে ভূমিধসে দুই রোহিঙ্গা শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে।
গত কয়েকদিনের টানা ভারী বর্ষণের ফলে বিকেল ৫টার দিকে উখিয়ায় পাহাড় ধসের ঘটনায় মাটিচাপায় রোহিঙ্গা মা ও মেয়ে মারা গেছে।
ফায়ার সার্ভিসের কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক অতীশ চাকমা একটি গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মৃত জান্নাত আরা (২৮) ও তার ১ বছর বয়সী মেয়ে মাহিমা আক্তার বালুখালী ৯ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সি-ব্লকের বাসিন্দা ছিলেন। পাহাড় ধসের ঘটনায় আহত হয়েছেন জান্নাতের স্বামী আনোয়ার হোসেন (৩৫)।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সোমবার ভারী বর্ষণের ফলে বিকেলে পাহাড়ের খাদের নিচে বসবাসকারী আনোয়ারের ঘরের ওপর মাটি ধসে পড়ে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের উখিয়া স্টেশনের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে মা-মেয়েকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করে। আহত গৃহকর্তা আনোয়ারকে উদ্ধারের পর স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এদিকে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে চকরিয়ায় পাহাড় ধসে দুই শিশু মারা গেছে।উপজেলার বরইতলী ইউনিয়নের পাহাড়ি গ্রাম বড়ঘোনা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
চকরিয়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেপি দেওয়ান জানান, ভারী বর্ষণে ওই এলাকার আনোয়ার হোসেনের বাড়ির দেওয়ালে পাহাড়ের মাটি এসে পড়ে। এ সময় বাড়ির দেওয়াল চাপা পড়ে আনোয়ার হোসেনের ৫ বছর বয়সী ছেলে সাবির ও ১ বছর বয়সী মেয়ে তাবাবসুম মারা যায়।
খবর পেয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানকে নিয়ে উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা ও পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গেছে বলে জানান তিনি।
এর আগে দুপুরে আলীকদম উপজেলায় পাহাড় থেকে মাটি কাটার সময় ভূমিধসে ২ রোহিঙ্গা শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। তারা হলেন-ছবি রহমান ও মোহাম্মদ মুসা।
শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের (আরআরআরসি) কার্যালয় এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। আরআরআরসি জানিয়েছে, তারা গত বুধবার শ্রমিকের কাজ করতে আলীকদম গিয়েছিল। তাদের মরদেহ ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বলেন, মুষলধারে বৃষ্টি উখিয়া ও টেকনাফের ক্যাম্পে আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধসের ঘটনা ঘটছে। ক্যাম্পে সম্প্রতি মোট ১১৯টি ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে আশ্রয়কেন্দ্রের দেড় হাজারের বেশি ঘর সম্পূর্ণ বা আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অন্তত ৯০ রোহিঙ্গাকে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।