মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলায় বাল্কহেডের ধাক্কায় একটি পিকনিকের যাত্রীবাহী ট্রলার ডুবে গেছে। এ ঘটনায় আটজনের মরদেহ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস। নিখোঁজ আছেন আরও অন্তত ৩ জন।
শনিবার (৫ আগস্ট) রাত আটটার দিকে উপজেলার তালতলা-গৌরগঞ্জ খালের রসকাঠি এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
লৌহজং ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার কায়েস আহম্মেদ জানান, মোট আটজনের লাশ উদ্ধার করেছি। এদের আটজনের লাশ ইতোমধ্যে স্থানীয় হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। একজনের লাশ নদীর পাড়েই আছে। ঢাকা থেকে ডুবুরি দল আসছে।
তিনি আরও জানান, যাত্রীবাহী একটি পিকনিকের ট্রলার পদ্মা নদী ভ্রমণ শেষে বাড়ি ফেরার পথে লৌহজং উপজেলার ডহুরি তালতলা খালের রসের কাঠি এলাকায় এ ট্রলার ডুবির ঘটনা ঘটে। আমরা এ পর্যন্ত আটজনের লাশ উদ্ধার করতে পেরেছি। দূর্ঘটনার পর ৩৫ জন তীরে উঠতে সক্ষম হয়।
লাশ উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে সাত বছরের একটি শিশু, একজন নারী (৩৪) ও তিন তরুণ আছেন। তাৎক্ষণিকভাবে তাঁদের নাম-পরিচয় পাওয়া যায়নি।
ফায়ার সার্ভিসের আরেক কর্মকর্তা বলেন, পিকনিকের ট্রলারে ছিলেন ৪৬ জন। ট্রলারডুবির ঘটনায় এখনো আটজন নিখোঁজ আছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ দুপুরের পর সিরাজদিখান উপজেলার লতাব্দি ইউনিয়নের নারী-শিশুসহ ৪৬ জন ব্যক্তি ট্রলারে করে পদ্মা নদীতে পিকনিকে যান। পিকনিক শেষে ট্রলারটি উচ্চ শব্দে গান বাজাতে বাজাতে তালতলা-গৌরগঞ্জ খাল দিয়ে লতাব্দির দিকে যাচ্ছিল। এ সময় বিপরীত দিক থেকে একটি বাল্কহেড বালু আনতে পদ্মা নদীর দিকে যাচ্ছিল। রাত আটটার দিকে ট্রলারটি লৌহজংয়ের রসকাঠি এলাকায় পৌঁছালে বাল্কহেডটি ট্রলারের ওপরে উঠে যায়। বাল্কহেডের ধাক্কায় সঙ্গে সঙ্গে ট্রলারটি পানিতে তলিয়ে যায়।
এ সময় ট্রলারের অধিকাংশ যাত্রী সাঁতরে উঠলেও ১১ জন পানিতে তলিয়ে যান। তাঁদের মধ্যে ৮ জনের লাশ উদ্ধার হয়েছে। বাকিরা নিখোঁজ।
লৌহজং থানার উপপরিদর্শক (এসআই) অখিল রঞ্জন সরকার বলেন, আমাদের সামনে এখন পর্যন্ত একজন নারীর লাশ আছে। বাকিদের লাশ হাসপাতাল থেকে তাঁদের বাড়িতে নেওয়া হয়েছে বলে শুনেছি। এখনো কারও পরিচয় জানা যায়নি। নিখোঁজ ব্যক্তিদের উদ্ধারের কাজ চলছে।
ট্রলারডুবির নেপথ্যে তরুণদের উচ্চ শব্দের গানবাজনাকেই দায়ী করছেন স্থানীয়রা।
তাদের ভাষ্য, উঠতি বয়সী তরুণেরা নিয়মিত ট্রলারে বিকট শব্দে গান বাজিয়ে পিকনিকে যান। আশপাশে কী আছে, সেটা তাঁরা খেয়াল করেন না। বর্ষা মৌসুমে দিনরাত ২৪ ঘণ্টায় তালতলা-গৌরগঞ্জ খাল দিয়ে শত শত বাল্কহেড চলাচল করে। এতে প্রায় সময় নৌ দুর্ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা আরও জানান, গত বছর এমন একটি দুর্ঘটনা ঘটার পর প্রশাসনের নজরদারিতে কয়েক দিন বাল্কহেড চলাচল বন্ধ ছিল। নৌ দুর্ঘটনা রোধে ওই খাল দিয়ে বাল্কহেড চলাচল বন্ধের কথাও বলেন তারা।