বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, পুলিশের হুইসেল (বাঁশি) ও সাউন্ড গ্রেনেডের আওয়াজ শুনে পালাবে না এমন মানসিকতা তৈরি করতে হবে। এ জন্য জনগণকে নিয়ে অসীম সাহসিকতার সঙ্গে ছাত্র-শ্রমিক, যুবক—সবাইকে মাঠে নামতে হবে।
তিনি বলেন, যারা পুলিশের একটি হুইসেল (বাঁশি), একটি সাউন্ড গ্রেনেডের আওয়াজ শুনে পালাবে না—সেই ধরনের মানসিকতা তৈরি করতে হবে, সেই ধরনের সাহস তৈরি করে দাঁড়াতে হবে।
সোমবার (২৫ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশে মির্জা ফখরুল ইসলাম এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, রক্তের দামে কেনা বাংলাদেশ কোনো দেশের প্রভুত্ব মানবে না। কোনো দেশ আমাদের ওপর প্রভুত্ব করতে চাইলে দেশের মানুষ তা মেনে নেবে না। দেশকে পরাধীন করার ক্ষমতা কারও নেই। তাদের জেনে রাখতে হবে, বাংলাদেশের মানুষ কোনো দিন সেই প্রভুত্ব স্বীকার করেনি। মোগল আমলে করেনি, ব্রিটিশ আমলে করেনি, পাকিস্তান আমলে করেনি, এখনো করবে না।
ক্ষমতাসীনরা ছদ্মবেশী গণতন্ত্র চালু করেছে দাবি করে বিএনপির এই নেতা বলেন, আওয়ামী লীগকে একদিন ক্ষমতা ছাড়তে হবে। তবে এজন্য সাধারণ মানুষকে আন্দোলনে নামাতে হবে। বাংলাদেশের সব গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করেছে ক্ষমতাসীনরা।
পরিকল্পিতভাবে ২০১৪, ২০১৮, ২০২৪ সালে তারা নিজেরা নিজেরা নির্বাচন করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আর দেশের মানুষ নিজেদের ভোটের অধিকার হারিয়েছেন।
ছাত্র ও যুবসমাজকে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক লড়াই সহজ নয়, ১৫ বছর ধরে লড়াই করে যাচ্ছি। অত্যাচার, নির্যাতন, পায়ের নখ তুলে ফেলা হয়েছে অনেক নেতাকর্মীর। গ্রামের নেতাকর্মীদের অবস্থাও খুব খারাপ।
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী কারাবন্দী ইমরান খানের কথা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, পাকিস্তানের দিকে তাকিয়ে দেখুন। আমরা পাকিস্তানের নাম শুনলেই সবাই ফুসকে উঠি, অন্যভাবে চিন্তা করি। ইমরান খান দেখিয়ে দিয়েছেন কীভাবে তরুণদের মাঠে নিয়ে আসতে হয়। তিনি দেখিয়ে দিয়েছেন, কীভাবে নারীদের মাঠে আনতে হয়।
তিনি বলেন, আমাদের চেয়ে কম অত্যাচার তাদের ওপরে হয়নি। তারা সেনানিবাসে আক্রমণ করেছিল, তারা মার্কিনদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে, তারা সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আন্তর্জাতিক বিশ্ব নিশ্চয়ই বিষয়গুলো দেখবে, অতীতেও দেখেছে। আমরা বিশ্বাস করি, এই দেশকে পরাধীন করার ক্ষমতা কারও নেই। এই ভয়াবহ শাসকগোষ্ঠী, যারা নানা নাটক করে, জোর করে ক্ষমতা দখল করে আছে, তাদের একদিন চলে যেতেই হবে।
আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, লক্ষ্য, আকাঙ্ক্ষা, স্বপ্ন—সব ধ্বংস করে দিয়েছে দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা, ভোট দিয়ে প্রতিনিধি নির্বাচন করা, গণতান্ত্রিক পরিবেশে বাস করা, স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারা, লিখতে পারা, ভিন্নমত পোষণ করতে পারা, রাষ্ট্রে জনগণের মালিকানা—সব তারা কেড়ে নিয়েছে।