নির্বাচন কমিশন অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের শর্ত রক্ষা না করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ইচ্ছার কাছেই আত্মসমর্পণ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, তপশিল ঘোষণার সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের উচিত ছিল ভোট গ্রহণ সময় দিনে হবে, না নিশিরাতে হবে, সেটি বলা।
শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) বিকালে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, আবারো একতরফা নির্বাচনের জন্য সকল শক্তি নিয়োগ করেছে আওয়ামী সরকার। আজ্ঞাবাহী নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে নির্বাচনী তপশিল ঘোষণা করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের শর্ত রক্ষা না করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ইচ্ছার কাছেই আত্মসমর্পণ করেছে।
বিএনপির সিনিয়র এই নেতা বলেন, তপশিল ঘোষণার সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের উচিত ছিল ভোট গ্রহণ সময় দিনে হবে, না নিশিরাতে হবে, সেটি বলা। দেশ এক ভয়ঙ্কর ক্রান্তিকাল অতিবাহিত করছে। চারিদিকে শুধু অধিকার বঞ্চিত মানুষের করুন আর্তনাদ, হাহাকার আর বেদনাবিধুর উপাখ্যান। ভয় আর শঙ্কা মানুষের পিছু নিয়েছে।
তিনি বলেন, সার্বভৌমত্বকে বিক্রি করে দিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকার ‘গ্যারান্টিপত্র’ আদায় করা হয়েছে। আর সেজন্য জনগণের পছন্দে সরকার গঠন ও পরিবর্তনে গণতান্ত্রিক রীতিকে গুম করা হয়েছে।
জনগণকে দমন করে আওয়ামী ফ্যাসিবাদ এখন সর্বগ্রাসী রূপে আত্মপ্রকাশ করেছে। অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনকে চিরবিদায় দিতে চলছে নানা সর্বনাশা আয়োজন। সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি তোলা মাত্রই রক্ত ঝরানো হচ্ছে গণতন্ত্রকামী মানুষদের।
বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী জনগোষ্ঠীই এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বুলেটের টার্গেট অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, মূলত বাংলাদেশে গণতন্ত্র এখন মৃত। বারবার গণতন্ত্রকে হত্যা করাই আওয়ামী লীগের নিজস্ব শৈলী।
রিজভী বলেন, জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে ভোটারশূন্য একতরফা নির্বাচনে দারুণ উল্লসিত প্রধানমন্ত্রী। কারণ এই পদ্ধতিতে যেনতেন প্রকারে ক্ষমতায় থাকার বিকল্প নেই। গত ১৫ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকতে গিয়ে জনগণের লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা নিজেদের পকেটে ঢোকানো যায়। নেতাকর্মীদের ধনসম্পত্তি বৃদ্ধি করা যায়। বাংলাদেশের প্রতি ধূলিকণায় দুর্নীতিকে ব্যাপ্ত করেছেন তিনি। উনি অবাধ নির্বাচনে ভয় পেলেও অবাধ দুর্নীতিকে প্রসারিত করেন অতি আনন্দে।
বিএনপিসহ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশকে উস্কানি দিচ্ছে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে বিএনপি ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার, মৃত্যু, মামলা, আসামী এবং আহতদের সংখ্যা তুলে ধরেন রুহুল কবির রিজভী।
তিনি জানান, এসময়ে ৩৯৫ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, আহত হয়েছেন ১৫ জন, মৃত্যু এক জন, মামলা দায়ের করা হয়েছে ৮টি। এসব মামলায় আসামী করা হয়েছে ১০৬৫ জনকে।