বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম ইসলাম আলমগীর দলীয় চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বিদেশে উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করতে তার নিঃশর্ত মুক্তির দাবি পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
সোমবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয় পার্টির (জাফর) এর প্রয়াত চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী কাজী জাফর আহমেদের ৭ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় তিনি বলেন, ‘আপনারা জানেন আমাদের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় গতকাল (রবিবার) তাকে আবার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বিএনপি নেতা বলেন, ‘খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি এবং উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে পাঠানোর দাবিতে আমাদের দল দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছে, কিন্তু ‘অনির্বাচিত ও দায়িত্বজ্ঞানহীন’ সরকার তাকে ক্ষমতায় থাকার প্রধান বাধা বলে মনে করে তাতে কর্ণপাত করছে না।’
তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়ার দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি। এই কর্মসূচি থেকে আমিও তার (নিঃশর্ত) মুক্তি দাবি করছি।’
এর আগে রবিবার রাতে খালেদা জিয়াকে চিকিৎসা ও কিছু মেডিকেল টেস্টের জন্য এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
খালেদা জিয়ার মেডিকেল টিমের সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, বিএনপি চেয়ারপার্সনের মেডিকেল বোর্ড তার পরীক্ষার রিপোর্ট পর্যালোচনা করে তাকে হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দিয়েছে। ‘তার পরবর্তী চিকিৎসা পদ্ধতি নির্ধারণের জন্য তার আরও কিছু মেডিকেল পরীক্ষা করা হবে।’
৭৭ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিসসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছেন।
তার পরিবার একাধিক স্বাস্থ্য জটিলতার চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে একটি উন্নত কেন্দ্রে পাঠানোর অনুমতি চেয়ে সরকারের কাছে বেশ কয়েকটি আবেদন জমা দিয়েছে। কিন্তু সরকার প্রতিবারই তা প্রত্যাখ্যান করেছে। কারণ তিনি দুটি মামলায় দুর্নীতির দায়ে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন।
সরকার জনগণের ঐক্যে ভীত
ফখরুল বলেন, বর্তমান সরকারের ‘দুঃশাসনের’ কারণে জাতি এক সংকটময় সময় পার করছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ শুধু ক্ষমতাকে আঁকড়ে ধরে গণতন্ত্র ও সব গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দেশকে ফ্যাসিবাদী ও কর্তৃত্ববাদীতে পরিণত করেছে।
ফখরুল বলেন, জ্বালানি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে বিএনপি ২২ আগস্ট থেকে সারাদেশে আন্দোলন শুরু করেছে এবং সর্বত্র জনগণ স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থনে এতে অংশ নিচ্ছে।
তিনি অভিযোগ করেন, ‘আন্দোলনকে ভয় পেয়ে সরকার আওয়ামী লীগ ক্যাডারদের আমাদের নেতাকর্মীদের ও শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে হামলা চালাতে দিয়েছে।’
এছাড়া বিএনপি নেতা বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর গুলি ছুঁড়ছে, হামলা চালাচ্ছে, বহু মানুষ আহত হচ্ছে। ‘এটি আবারো সরকারের ভয়ানক সন্ত্রাসী চেহারা উন্মোচিত করেছে।’
ফখরুল বলেন, ‘সরকারের সবচেয়ে বড় ভয় হচ্ছে জনগণ একটি দৃঢ় ঐক্য গড়ে তুলেছে। জনগণের এই ঐক্য সরকারের পতন ত্বরান্বিত করবে।’