বাঘা প্রতিনিধি: রাজশাহীর বাঘা উপজেলা প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে রাতের আধাঁরে ও সকালে আম বাগান উজাড় করে ফসলি জমিতে পুকুর খনন করছেন এক শ্রেণীর অসাধু রাজনৈতিক নেতা।
স্থানীয়দের ভাষ্য, দিন দিন এসব অবৈধ পুকুর খননকারিদের দৌরাত্ম্য বৃদ্ধি পাওয়ায় অসহায় হয়ে পড়েছে ফসলি জমির মালিকেরা। বিভিন্ন সময় তাদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করতে গেলে উপজেলা প্রশাসনের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যাচ্ছে এসব অবৈধ পুকুর খননকারীরা।
উপজেলা প্রশাসন জানিয়েছে, অভিযান চালাতে গেলে পালিয়ে যাওয়ার কারণে তাদের বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগ করতে বেগ পেতে হচ্ছে। এছাড়াও তাদের বিরুদ্ধে কেউ কোন নিয়মিত মামলা না করায় অবৈধ পুকুর খননকারিদের আইনের ফাঁকফোঁকড় দিয়ে বের হয়ে যাচ্ছে।
জানা যায়, বাঘা উপজেলার চিহ্নিত রাজনৈতিক নেতার সাঙ্গপাঙ্গরা দিন দিন অবৈধভাবে আমবাগান কেটে ফসলি জমিতে পুকুর খননের ফলে ক্ষতির মুখে পড়েছে ফসলি জমির মালিকেরা। উপজেলা ৭টি ইউনিয়নের মধ্যে পুকুর খননের সবচেয়ে আলোচিত স্থানের তালিকায় রয়েছে–বাজুবাঘা, মনিগ্রাম, আড়ানী ও বাউসা ইউনিয়ন। মনিগ্রাম, আড়ানী ও বাসা ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় অন্ত্যত ৮-১০ টি পুকুর খনন চলমান রয়েছে। এ পর্যন্ত যতগুলো পুকুর খনন করা হয়েছে তার অধিকাংশই খনন হয়েছে এই ৩ টি ইউনিয়নে।
সচেতন মহলের মতামত এভাবে চলতে থাকলে একসময় বাঘা উপজেলায় ফসলি জমির অভাব দেখা দিবে। বাধ্য হয়ে ফসলি জমির মালিকেরা পুকুর খনন বন্ধের জন্য উপজেলা প্রশাসন ও বাঘা থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়ে থাকেন।
রবিবার (৩ মার্চ) বিকেলে উপজেলা মনিগ্রাম বলিহার হিন্দু পাড়া মাঠে ও বাউসা ইউনিয়নের আড়পাড়া বড়বিলে,কামারপড়া মাঠে আম বাগান উজাড় করে এবং ৩ ফসলি ফসলি জমিতে পুকুর খননের ভয়াবহ চিত্র দেখা যায়।
এ বিষয়ে কামাড়পাড়ার গ্রামের মাঠে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক রফিকুল ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এমন সমতল উর্বরতা ৩ ফসলি জমিতে পুকুর খনন করা দেখে আমার বুক ফেটে যাচ্ছে। জমির মালিকরা ও কিছু নেতা প্রভাবশালী হওয়াতে আমরা গরীব মানুষ কিছুই করতে পারছি না।
তিনি আরও বলেন, আমাদের তিন ফসলি ভুট্টার জমিতে জোড়পূর্বক পুকুর খনন করছে প্রভাবশালী একটি মহল। তাদের বিরুদ্ধে কোন ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব না। এ অবস্থায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) যেন এই পুকুর খনন বিষয়টি তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করেন এমন দাবি জানান তিনি।
এ বিষয়ে বাঘা উপজেলা নির্বাহী অফিসার তরিকুল ইসলাম জানান, ‘আইন প্রয়োগ করে পুকুর খনন বন্ধ করা যাচ্ছে না। এর জন্য দরকার জনসচেতনতা ও সম্মিলিত প্রচেষ্ঠা। সবাই সচেতন হলেই পুকুর খনন বন্ধ করা সম্ভব হবে বলে জানান এ কর্মকর্তা।’