আগামী নির্বাচনে ১৫০টি আসনে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন-ইভিএমে ভোটগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। তবে এর জন্য নতুন ইভিএম কেনার যে প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে পাঠিয়েছিল তা পাস হয়নি। বৈশ্বিক আর্থিক সংকটের কারণে সরকার এই প্রস্তাবে সায় দেয়নি বলে জানিয়েছে পরিকল্পনা কমিশন। ফলে ১৫০ আসনে ইভিএমে ভোটগ্রহণের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে নির্বাচন কমিশন।
সোমবার (২৩ জানুয়ারি) দুপুরে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম সাংবাদিকদের এই তথ্য জানিয়েছে।
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘ইভিএম প্রকল্পটি বিস্তারিত পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও পর্যালোচনা করে এবং বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে সরকারের আর্থিক সামর্থ্য বিবেচনায় আপাতত প্রক্রিয়াকরণ না করার জন্য সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।’
পরিকল্পনা কমিশন গতকাল (২২ জানুয়ারি) বিকেলে নির্বাচন কমিশনকে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে বলে জানান ইসি সচিব।
নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, এখন যে ইভিএম রয়েছে সেগুলো দিয়ে যত আসনে ভোটগ্রহণ করা যায় তত আসনেই ইভিএমে ভোট হবে। তবে ঠিক কত আসনে ইভিএমে ভোট করা যাবে তা জানতে আরও কয়েক দিন অপেক্ষা করতে হবে।
গত বছর কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর একে একে রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ, তথ্যপ্রযুক্তিবিদ, সাবেক সিইসিসহ কমিশনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে দফায় দফায় দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে সংলাপ করে।
আগামী নির্বাচন নিয়ে অনেক প্রস্তাবের মধ্যে বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল ইভিএমে ভোট করার বিরোধিতা করে। সংলাপে অংশ না নিলেও বিএনপির পক্ষ থেকে সরাসরি ইভিএমের বিরোধিতা করা হয়েছে। যদিও ক্ষমতাসীন দলসহ বেশ কিছু দল ইভিএমে ভোট নেওয়ার পক্ষে মতামত দিয়েছে।
এমন অবস্থায় শেষ পর্যন্ত সংরক্ষিত থাকা ইভিএমের পাশাপাশি নতুন করে প্রায় দুই লাখের মতো ইভিএম কিনে সর্বোচ্চ ১৫০ আসনে ভোট করার কথা ঘোষণা দেয়। সেজন্য আট হাজার কোটি টাকারও বেশি প্রকল্প গ্রহণ করে ইসি। তবে অর্থনৈতিক মন্দার কারণে শেষ পর্যন্ত সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে হচ্ছে নির্বাচন কমিশনকে।
২০১০ সাল থেকে বিভিন্ন স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার শুরু হয়। এটিএম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন তৎকালীন নির্বাচন কমিশন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার শুরু করলেও কোনো সংসদ নির্বাচনে ব্যবহার করেনি। পরবর্তী সময়ে কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশনও জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করেনি।
নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশন ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম পদ্ধতিটি সংশোধন করে এবং ছয়টি আসনে ইভিএমে ভোটগ্রহণ করে।