আন্দোলনে ব্যর্থ বিএনপি নতুন খেলা শুরু করেছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে কোনো খেলা খেলতে দেওয়া হবে না।
তিনি বলেন, মির্জা ফখরুল সাহেবরা আন্দোলন করে গোলাপবাগের গরুর হাটে হোঁচট খেয়েছেন। আন্দোলন এখন আর জমে না। বাজারে ভাটা পড়ে গেছে, এমতাবস্থায় আবার ড. ইউনূসকে নিয়ে নতুন খেলা শুরু করেছেন।’
বুধবার (৩০ আগস্ট) দুপুরে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, আন্দোলনে পরাজিত হয়ে আবারও ওয়ান-ইলেভেনের দুঃস্বপ্ন দেখছেন। আন্দোলনে পারলেন না, শেখ হাসিনাকে হটাতে হবে!কীভাবে হটাতে হবে? ওয়ান-ইলেভেনের মতো ড. ইউনূসের নেতৃত্বে একটা নতুন সরকার এমন কথা-বার্তা বাজারে শোনা যাচ্ছে। সেই দুঃস্বপ্ন দেখছেন কিনা জানি না। ওয়ান-ইলেভেনের সময় ইউনূস সাহেব কম চেষ্টা তো করেননি। তখনও ওনার ক্ষমতার খায়েশ হয়েছিল। সে খায়েশ পূর্ণ হয়নি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশকে নিয়ে বিশ্বের অনেক মোড়লের অনেক স্বপ্ন রয়েছে। যারা ইউনূসের মামলা স্থগিত করতে বলেন, মামলা কীভাবে স্থগিত হবে? মামলার কাগজপত্র, দলিল-দস্তাবেজ ঠিক আছে কি না, দেখুন।
সেতুমন্ত্রী বলেন, আবার একটু দ্বিধা লাগে যখন দেখি অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে উপদেশ আসে। আসল কথা হলো, অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচনের এটাকে সামনে রেখে বাংলাদেশের নির্বাচনকে বানচাল করা। বাংলাদেশে নির্বাচনের শান্তিপূর্ণ পরিবেশকে ভণ্ডুল। নতুন খেলা! পরিষ্কার বলতে চাই, বাংলার মাটিতে এই খেলা, এ অশুভ খেলা আমরা খেলতে দেব না।
ড. ইউনূসের সমালোচনা করে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর যে মানুষ একটা শোকও প্রকাশ করেনি। চার জাতীয় নেতাকে কারাগারে হত্যা করা হয়েছে, একটা কথাও বলেননি। আপনারা বিবেককে জিজ্ঞাসা করুন, এই ড. ইউনূস আমাদের শহীদ মিনারে কোনোদিন গেছেন? জাতীয় স্মৃতিসৌধে কোনোদিন গেছেন? আমাদের বন্যা, জলোচ্ছ্বাসে তিনি কখনো এসেছেন? তিনি কী কখনো সহানুভূতি প্রকাশ করেছেন?
ড. ইউনূসের জন্য আমাদের এত দরদ কেন? প্রশ্ন রেখে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ভয়াবহ করোনায় সময়ও তিনি কোনো কথা বলেননি। আমাদের দেশে রক্তের বন্যা বইয়ে যায়, ড. ইউনূস কথা বলেননি। আমি চাই, যেই মানুষ আমার সুখে-দুঃখে নেই, সেই মানুষের জন্য আমাদের এতো মায়াকান্না কেন? তিনি আমাদের সুখ-দুঃখে কষ্টের সময় নেই।
তিনি বলেন, নোবেল বিজয়ীরা যে বিবৃতি দিয়েছেন, সেই বিবৃতির জায়গা কিনতে দুই মিলিয়ন ডলার লাগে। হিসাব করেন, দুই মিলিয়ন ডলার। আমাদের দেশের পত্রিকায় একটি বিজ্ঞাপন দেবেন, এর জন্য স্পেসের হিসাব আছে। মার্কিন পত্রিকায় দুই মিলিয়ন ডলারের বিনিময়ে যে বিবৃতি তিনি দিয়েছেন, সেই টাকা কোথায় পেয়েছেন? এই অর্থ কোথা থেকে এলো?
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আক্ষেপ করে বলেন, আমরা এমন দেশে আছি, যে দেশে আমরা রাজনীতিতে সহাবস্থান করতে হচ্ছে পঁচাত্তরের খুনিদের সঙ্গে। সহাবস্থান করছি জাতীয় ৪ নেতার যারা হন্তারক, তাদের সঙ্গে আমাদের রাজনীতি করতে হচ্ছে।
বিএনপিকে দোষারোপ করে তিনি বলেন, একুশে আগস্টের আলামত যারা নষ্ট করেছিল, যারা হত্যাকাণ্ডকে চাপা দিতে জজ মিয়া নাটক সাজিয়েছিল তাদের সঙ্গে আজ আমাদের রাজনীতি করতে হচ্ছে। এটা দুর্ভাগ্য! স্বাধীন দেশ; এখন মনে হয়, এ দুর্ভাগা দেশ। স্বাধীনতার চেতনাবিরোধী, মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধবিরোধী শক্তিগুলোকে সহাবস্থানে নিয়ে এসেছে।