তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, খুলনা ও বরিশাল সিটির নির্বাচন প্রমাণ করেছে যে বিএনপি ভোট বর্জন করলেও জনগণ ভোট বর্জন করে না। ভবিষ্যতেও যদি বিএনপি ভোট বর্জন করে জনগণ ব্যাপকভাবে আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে।
আজ মঙ্গলবার (১৩ জুন) সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ‘মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক কিশোর উপন্যাস’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন এবং সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, গতকাল অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। মানুষ নির্বিঘ্নে উৎসব উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে ভোট দিয়েছেন। বরিশালে ৫০ শতাংশের বেশি এবং খুলনায় ৫০ শতাংশের কাছাকাছি ভোট কাস্ট হয়েছে। এতে প্রমাণিত হয়েছে বিএনপি ভোট বর্জন করলেও জনগণ ভোট বর্জন করে না। আমার মনে হয় বিএনপির এ ভোট থেকে শিক্ষা নেয়া প্রয়োজন।
তিনি বলেন, বিএনপি ভোট বর্জন করেছে, তাদের ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে যেতে নিষেধ করেছেন, তাদের দলীয় কর্মীদের ভোটে অংশগ্রহণে নিষেধ করেছেন। কিন্তু দেখা গেছে, তাদের দলীয় নেতাকর্মীরা দুটি সিটি করপোরেশনের ভোটে প্রার্থী হয়েছেন এবং জনগণ তাদের ডাকে সাড়া দেননি। মানুষ ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। এতে এটাই প্রমাণিত হয়েছে বিএনপি ভোট বর্জন করলেও, জনগণ ভোট বর্জন করে না। ভবিষ্যতেও যদি বিএনপি ভোট বর্জন করে জনগণ ব্যাপকভাবে আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে।
বরিশাল সিটি নির্বাচনে মেয়র পদপ্রার্থী ইসলামী আন্দোলনের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতী সৈয়দ মোহাম্মদ ফয়জুল করিমের ওপর হামলার বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, যারা এটি করেছেন, নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসন তদন্ত করছে। উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমি সংবাদ মাধ্যমে দেখেছি তার মুখে ঘুষি লাগলেও রক্ত বের হয়নি। তবে একজন প্রার্থীকে শারীরিকভাবে আঘাত করা কোনোভাবেই সমীচীন নয়। সবকিছু ছাপিয়ে অত্যন্ত সুন্দর, শান্তিপূর্ণভাবে ভোট হয়েছে।
ইসলামী আন্দোলন সিলেট ও রাজশাহীর নির্বাচনে ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে। এর পিছনে কোনো ইন্ধন আছে কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ইসলামী আন্দোলন রাজশাহী ও সিলেট সিটি করপোরেশনে ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে। দলটি দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। কিন্তু যারা বিজয়ী হয়েছে তারা তাদের চেয়ে প্রায় তিনগুণের কাছাকাছি ভোট পেয়েছেন। এতে তারা বুঝতে পেরেছেন আগামী দুই নির্বাচনেও তাদের কোনো ভরসা নেই। সেজন্য পরাজয়ের গ্লানি থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য তারা এ ঘোষণা দিয়েছেন।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেছেন যে বর্তমান সরকারের অধীনে সুষ্ঠু ভোট সম্ভব নয়- এ বিষয়ে জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, দেশের সমস্ত পত্রিকায় লিখেছে অত্যন্ত সুষ্ঠু, সুন্দর ভোট হয়েছে। সমস্ত টেলিভিশন রিপোর্ট করেছে অত্যন্ত সুন্দর, সুষ্ঠু ভোট হয়েছে। মির্জা ফখরুল গদবাধা কথা। তিনি একই টেপরেকর্ড থেকে বের হতে পারছেন না, এটি অত্যন্ত দুঃখজনক। তাকে আরেকটা টেপ রেকর্ড দিলে ভালো হয়।
তিনি বলেন, আমাদের দেশ ও আশপাশের দেশের নির্বাচনে, বিশেষ করে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অনেক সহিংসতা হয়, অনেক গণ্ডগোল হয়। সেই তুলনায় গতকালের নির্বাচন আমি মনে করি একেবারে একটি মডেল নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।