সারাদেশের কয়েকটি বিভাগে গণ সমাবেশের আয়োজন করেছে বিএনপি। খুলনা, বরিশাল ও রংপুরে আয়োজিত সমাবেশের আগে পরিবহন ধর্মঘট ডাক দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
পরিবহনমালিক ও শ্রমিকেরা দাবি হিসেবে মহাসড়কে নছিমন-করিমন, ইজিবাইক ও বিআরটিসি বাস চলাচল বন্ধ এবং ভাড়ায় মোটরসাইকেলে যাত্রী পরিবহন বন্ধের দিকেই জোর দিচ্ছেন৷ তবে বিএনপি নেতাদের অভিযোগ সমাবেশ পণ্ড করতেই ‘উপরমহল’র নির্দেশে এসব ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হচ্ছে।
অন্যদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, অগ্নিসংযোগের ভয়েই মূলত সড়কে গাড়ি না নামিয়ে থাকতে পারেন পরিবহনমালিক ও শ্রমিকেরা।
বৃহস্পতিবার(২৭ অক্টোবর) দুপুরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে সড়ক পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা জোরদার ও দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে সুপারিশ প্রণয়নে গঠিত কমিটির ১১১ দফা সুপারিশমালা বাস্তবায়নের জন্য অনুষ্ঠিত টাস্কফোর্সের ষষ্ঠ সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এমনটা জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
বিএনপির সমাবেশ ঘিরে ডাকা ধর্মঘটের বিষয়ে জানতে চাইলে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, অতীতে বাসমালিক-শ্রমিকেরা দেখেছেন অগ্নিসংযোগ কাকে বলে। বাস বের হলেই আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে।বিএনপি-জামায়াত সেই যে আন্দোলন শুরু করেছে, সেটা শেষ করেনি। তারা বলেনি ওই আন্দোলন শেষ হয়ে গেছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এখন যদি মালিক-শ্রমিকেরা মনে করেন, তাঁদের বাস, ট্রাক তথা যানবাহনটি (হামলা থেকে) নিরাপদ নয়, তাহলে তাঁরা রাস্তায় নামাতে না-ও পারেন। এ জন্য তো আমরা তাঁদের ফোর্স (বাধ্য) করছি না। এ ব্যাপারে তাঁরা স্বাধীন, তাঁরা কী করবেন, না করবেন সে সিদ্ধান্ত নেওয়ার। তাঁরা (মালিক-শ্রমিক) যদি সিদ্ধান্ত নিয়ে মনে করেন বাসটি গেলে আবার কোনো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে, আগের মতো যেমন বাস পুড়িয়ে দিয়েছে।
তিনি বলেন,সে অভিজ্ঞতা তো রয়েছে। সে অভিজ্ঞতা থেকে তাঁরা যদি সিদ্ধান্ত নেন, তাহলে আমাদের কিছু বলার নেই।
বিএনপির সভা-সমাবেশ করা নিয়ে আমরা কোনো বাধা দিচ্ছি না উল্লেখ করে তিনি বলেন,যেখানে করতে চাচ্ছে, সেখানেই করছে। এখন বাস আসবে কি আসবে না, সেটা নিয়ন্ত্রণ করে বাস মালিক সমিতি এবং শ্রমিক সমিতি। তারা কী করবে না করবে এটা তাদের ব্যাপার।
আজকের সভার আলোচনার বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, অবৈধ ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ স্কুলগুলোকে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) নীতিমালার অধীনে নিয়ে আসা হবে। বিআরটিএ তদারকি শুরু করবে। এ-সংক্রান্ত একটি কর্মসূচি বিআরটিএ ঘোষণা করবে। চালক বা শ্রমিকদের ডোপ টেস্ট সহজ ও স্বল্পতম সময়ের মধ্যে করার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, টার্মিনালের বাইরে কোনো ট্রাক থেকে টোল নেওয়া যাবে না। এসব টোল মালিক-শ্রমিক সমিতি নির্ধারণও নিয়ে থাকে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কোনো সড়ক থেকে সার্ভিস চার্জ নেওয়া যাবে না। কোথায়, কত টাকা টোল নেওয়া যাবে, সে বিষয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে প্রজ্ঞাপন জারি হবে। পৌরসভা ও সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ সেভাবে ব্যবস্থা নেবে।
‘ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ আন্তজেলা বাস টার্মিনাল নির্মাণকাজ শুরু হতে যাচ্ছে। এ বিষয়ে আজ আলোচনা হয়েছে। আমাদের বাস ও ট্রাক টার্মিনাল স্বল্প। এই সংখ্যা আরও বাড়ানোর বিষয়ে কথা হয়েছে’, যোগ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।