বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এই কয়েক মাসের মধ্যে তিনবার বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হলো। এর প্রধান কারণ, বিদ্যুৎ খাতে যে দুর্নীতি করেছে, সেই দুর্নীতির জন্য যে পরিমাণ ব্যয় বৃদ্ধি পাচ্ছে, তা মেটানোর জন্য এখন জনগণের পকেট থেকে তাদের টাকা কেটে নিতে হবে।
বুধবার (১ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের দলীয় কার্যালয়ে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) বিএনপি–সমর্থক সাবেক ও বর্তমান চেয়ারম্যানদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় মির্জা ফখরুল ইসলাম এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, এই কয়েক মাসের মধ্যে তিনবার বাড়ানো হলো। বিদ্যুতের দাম বাড়ানোয় অর্থনীতিতে একটা নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। কলকারখানার উৎপাদন ব্যয় বাড়ছে। মানুষের জীবনযাত্রার ওপর চাপ পড়ছে। আজকে চাল-ডাল, তেল–লবণসহ প্রতিটির মূল্য ভয়ানকভাবে বেড়ে গেছে। প্রায় তিন গুণ, চার গুণ, পাঁচ গুণ থেকে এখন ৫৯ ভাগ বেড়েছে।
তিনি বলেন, দেশের মানুষ যখন চালের জন্য টিসিবির ট্রাকের পেছনে এক মাইল লম্বা লাইন দিচ্ছে, সারা দেশে মানুষের মধ্যে যখন অস্বস্তিকর হাহাকার পরিস্থিতি, প্রায় দুর্ভিক্ষের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে–সেই সময়ে আমাদের অনির্বাচিত অবৈধ প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রপতির দেশের বাড়ি হাওর এলাকায় গেছেন এবং সেখানে একটি উৎসব হচ্ছে। সেই উৎসবে প্রায় ২৩ পদের মাছ দেওয়া হয়েছে, আপনারা পত্রিকায় দেখেছেন। যে মানুষগুলো এখন খাদ্যাভাবে ভুগছে, চাল পাচ্ছে না, সেই মানুষগুলোর সঙ্গে এটা একটা রসিকতা বা তামাশা করা হচ্ছে। এটা দেশের মানুষ কোনো দিন ক্ষমা করবে না। এটা আমাদের আরেকটা সময়ের কথা মনে করিয়ে দেয়।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ১৯৭৪-৭৫ সালেও কিন্তু তাদের দুর্নীতির কারণে, অব্যবস্থার কারণে দেশে দুর্ভিক্ষ হয়েছিল, লক্ষ লক্ষ মানুষ না খেতে পেরে মারা গিয়েছিল।
এদিকে প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ স্থগিত করা নিয়ে সরকারের তীব্র সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব বলেছেন, পরীক্ষার ফলাফল গতকালই ঘোষণা করার চার ঘণ্টার মধ্যে আবার স্থগিত করা হলো। অর্থাৎ গোটা শিক্ষাব্যবস্থাই শুধু নয়, এই প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষার ফলাফলও সঠিকভাবে প্রকাশ করতে পারেনি (সরকার)। পুরোপুরি ব্যর্থ।
বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের অত্যাচার-নির্যাতনের অভিযোগ তুলে মির্জা ফখরুল বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে দেখুন, ছাত্রলীগ নামধারী সন্ত্রাসীদের অত্যাচার-নির্যাতনে আজকে মেয়েরা পর্যন্ত নিরাপদ নয়। সেখানে কী ভয়াবহ নির্যাতন হয়েছে যে হাইকোর্ট বলেছেন এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। সব বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজগুলোতে একই অবস্থা। শিক্ষাব্যবস্থা প্রায় ভেঙে পড়ার মতো অবস্থা।
মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে লন্ডন থেকে স্কাইপে বক্তব্য দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
মির্জা ফখরুল ইসলামের সভাপতিত্বে বরিশাল বিভাগের ইউপি চেয়ারম্যানদের এই মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান ও সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন আহমেদ ও আলতাফ হোসেন চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব মজিবুর রহমান সারোয়ার ও সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস জাহান শিরিন, ভারপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ।