আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আজকে বিএনপির নেতৃত্বে সাম্প্রদায়িকতার যে বিষবৃক্ষ বাংলাদেশে ডালপালা ছড়িয়েছে, আজকের এই দিনে শপথ নিতে হবে যে, বাংলা নববর্ষে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সাম্প্রদায়িকতার অশুভ বিষবৃক্ষকে আমরা উৎখাত করব। এটাই হোক আমাদের অঙ্গীকার। এখানে কোনো আপস নেই। পয়লা বৈশাখের সঙ্গে যাদের সংঘাত তারাই সাম্প্রদায়িকতা বিশ্বাস করে।
আজ শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) সকালে নববর্ষ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ উপলক্ষ্যে রাজধানীর বাহাদুর শাহ পার্কে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ কতৃক আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, তারা (বিএনপি) সাম্প্রদায়িকতায় বিশ্বাস করে, তাদের আদর্শ দ্বিজাতিতত্ত্ব ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিরোধিতা করা। এ অশুভ সাম্প্রদায়িক শক্তিকে পরাজিত করে বঙ্গবন্ধু স্বপ্নের সোনার বাংলা এগিয়ে যাবে। আমরা বাংলা ও বাঙালি চেতন ধারণ করি।
পয়লা বৈশাখসহ বাংলাদেশের ইতিহাস ঐতিহ্যের সঙ্গে আওয়ামী লীগ আগেও ছিল এখনো আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কে পালন করল, না করল, তাতে আমাদের কোনো আগ্রহ নেই, আমরা পালন করব। যতদিন আওয়ামী লীগ থাকবে ততদিন বৈশাখ উদযাপন করা হবে। বৈশাখ আত্মপরিচয় প্রকাশ করার দিন, অন্য দিকে অসাম্প্রদায়িক চেতনা প্রকাশের দিন। উৎসবমুখর পরিবেশে বাঙালি পয়লা বৈশাখ উদযাপন করছে। বাঙালির চেতনার ইতিহাস ঐতিহ্যের ঠিকানা পয়লা বৈশাখ।’
সেতুমন্ত্রী বলেন, বহুদিন পর বাঙালির চিরচেনা পরিবেশে পয়লা বৈশাখ উদযাপিত হচ্ছে। সারা বাংলায় আজকে নবজাগরণের ঢেউ উঠেছে। বাংলাদেশ আর বাঙালি সংস্কৃতির এমন উৎসবমুখর দিনটিকে বাংলার মানুষ তাদের হৃদয়ে যত ভালোবাসা আছে, তাদের অন্তরে যত চেতনা আছে, সবকিছু উদার করে দিয়ে আজ বৈশাখ উদযাপন করছে।
তিনি বলেন, ভুলে যাবেন না আমাদের নববর্ষ বাংলার নববর্ষ। এটাই আমাদের নববর্ষ। পহেলা জানুয়ারি যে নববর্ষ ওটা ইংরেজি নববর্ষ। আমরা ওটা ইংরেজি নববর্ষ হিসেবে পালন করি। কিন্তু আমাদের আবেগে, হৃদয়ে, চেতনা ও ইতিহাস ও ঐতিহ্যে, আমাদের অস্তিত্বের ঠিকানা হচ্ছে পয়লা বৈশাখ।
ওবায়দুল কাদের বলেন, এই পয়লা বৈশাখ নতুন বার্তা নিয়ে এসেছে। বিশ্ব অর্থনৈতিক সংকট, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, ডলারের সংকট, জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধি, জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি, এইসব বিভিন্ন সমস্যা যখন আক্রান্ত, তখন পয়লা বৈশাখ, পরপর ঈদের উৎসব, আমাদের জীবনে দুটি উৎসব, এই দুই উৎসবে আমাদের শহরে, আমাদের গ্রামের ব্যবসা-বাণিজ্যের, কেনা-বেচার আমাদের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার এক সুবর্ণ সুযোগ নিয়ে এসেছে। আমাদের নেত্রী পরিস্থিতিকে সংকটকে সম্ভাবনা রূপ দিচ্ছে। এই দুটো উৎসবে যে বাণিজ্য হবে, এ বাণিজ্য গতিটা আমাদের অর্থনীতিতে নতুন প্রাণ সঞ্চয় করবে।
তিনি আরো বলেন, বিশ্ব অর্থনৈতিক সংকটকে মোকাবিলাসহ সব সংকটকে মোকাবিলায় চ্যালেঞ্জিং সিদ্ধান্ত নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমাদের চেতনার যে বাংলাদেশ, আমাদের চেতনার যে ধর্মনিরপেক্ষতা, যেই চেতনা বাংলা নববর্ষের সূচনা হয়, এই চেতনা অসাম্প্রদায়িক চেতনা। আজকে বাংলাদেশে আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করি, আমাদের প্রধানতম শত্রু হচ্ছে সাম্প্রদায়িকতা।