নেটিজেনদের আপত্তির মুখে ব্যাচেলর পয়েন্ট নাটকের বেশ কিছু পর্ব ইউটিউব থেকে সরিয়ে ফেলেছে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ধ্রুব টিভি। অশালীন ও আপত্তিকর ভাষা ব্যবহারের অভিযোগে চতুর্থ সিজনের ৭৪, ৭৫,৭৬ ও ৭৭তম পর্ব মুছে ফেলা হয়েছে। পাশাপাশি ধ্রুব টিভির ভেরিফায়েড ফেসবুকে এ নিয়ে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
বেশ কিছুদিনের নীরবতার পর অবশেষে বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন নাটকটির নির্মাতা কাজল আরেফিন অমি।
নাটকের বিতর্কিত সংলাপ ‘যৌনকর্মীর ছেলে’ ব্যবহার প্রসঙ্গে নিমার্তা কাজল আরেফিন অমি বলেন, ‘যৌনকর্মীর ছেলে’ সংলাপটা নিয়ে অনেকের দ্বিমত ছিল। আমার পয়েন্টটা হলো আমরা কিন্তু স্বাভাবিক জীবনে অনেক গালিই দিয়ে কিংবা শুনে থাকি, যা আসলে প্রকাশযোগ্য নয়। তাই ওই গালির পরিবর্তে নতুন একটি শব্দ যোগ করেছি। এই ধরনের শব্দ বাস্তব জীবনেও কিন্তু আমরা ব্যবহার করে থাকি। বাংলাদেশের নাটক-সিনেমায়ও এই শব্দগুলো ব্যবহার হয়। তাই সেসব শব্দের বদলে আমি ‘যৌনকর্মীর ছেলে’ শব্দটি ব্যবহার করেছি। যৌনকর্মী একটা শ্রেণিকে বোঝায়। যৌনকর্মী বলা তো তাদের জন্য স্বীকৃতি। কিন্তু আমরা চরিত্রের প্রয়োজনে বা নেগেটিভিটি বোঝানোর জন্য অনেকসময় মদ খাওয়া, ধর্ষণ, সিগারেট খাওয়া, মিথ্যা বলা, চুরি করা বা গালি ব্যবহার করি। সেই জায়গা থেকেই শব্দটা ব্যবহার করেছি।
এটা নিয়ে যারা নেগেটিভ মন্তব্য করেছে, এর মধ্যে আমি খেয়াল করে দেখেছি একটা লেখাই বিভিন্ন পেজে আপলোড করা হয়েছে। একটা মুষ্টিমেয় গ্রুপ যারা ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’ পছন্দ করে না তারা এই লেখাটা লিখে বিভিন্ন পেজে আপলোড দিয়েছে। কিন্তু আমরা এই সংলাপটা মিউট করার জন্য আপাতত সেই পর্বগুলো প্রাইভেট করে রেখেছি। যারা ব্যাচেলর পয়েন্টকে আপাতত পছন্দ করছে না বা হেইট করছে তাদেরকে সম্মান জানিয়েই কাজটি করা হয়েছে।’
তিব্যাচেলর পয়েন্টের আসল দর্শক সংলাপটি পছন্দ করেছে উল্লেখ করে অমি বলেন, বিভিন্ন পোস্টে যারা নেগেটিভ মন্তব্য করেছেন, সেখানে গিয়ে কিন্তু তারা এটার পক্ষে যুক্তি দিয়েছেন। সেই জায়গা থেকে কিন্তু আমি চাইলে সংলাপটা রেখেও দিতে পারতাম। কিন্তু সেটা করিনি। কারণ, যারা সংলাপটা অপছন্দ করছেন তারাও তো আমার দর্শক। তাদের সঙ্গে তো আমার ব্যক্তিগত কোনো শত্রুতা নেই। ব্যাচেলর পয়েন্ট দেখছেন বলেই নেগেটিভ জিনিসগুলো তাদের চোখে পড়েছে।
নির্মাতা অমি বলেন, ব্যাচেলর পয়েন্ট আমি আকাশ থেকে বানাই না। সমাজ থেকেই বানাই। এখানে তাই দেখানো হয় যা আমরা করি। আমরা বাস্তবজীবনে কিন্তু কারণে-অকারণে এর চেয়েও বেশি গালি ব্যবহার করি। তার ফিফটি পারসেন্ট হয়তো নাটকে দেখাতে পারি। বাংলাদেশে এখন কিন্তু ওটিটিতে গালি ব্যবহারের ক্ষেত্রে কোনো বিপি দেওয়া হয় না। সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া সিনেমায়ও অনেক গালি রয়েছে। সেটা কিন্তু মানুষ পরিবার নিয়ে দেখেছে। আর ব্যাচেলর পয়েন্টের শুরুতেই তো আমরা ডিসক্লেইমার দিয়ে দিচ্ছি। এটা কিন্তু অ্যাডাল্ট কনটেন্ট। এটা বাচ্চাদের জন্য না।
তবে দর্শকের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে নিজের জায়গায় আরো বেশি সতর্ক থাকার কথাও উল্লেখ করেছেন কাজল আরেফিন অমি। বললেন, আমি আরও সতর্ক থাকব। আরও বেশি বিপ ব্যবহার করবো। দর্শকের ভালোবাসা নিয়েই নাটকটি তার নিজস্ব গতিতে এগিয়ে যাবে।