ভারতের কলকাতায় চিকিৎসার জন্য গিয়ে নিখোঁজের পর হত্যাকাণ্ডের শিকার ঝিনাইদহ-৪ আসনের এমপি আনোয়ারুল আজিম আনারের হত্যা মামলা তদন্ত করতে ভারত গিয়েছিল ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের একটি প্রতিনিধি দল।
বৃহস্পতিবার (৩০ মে) দুপুরে তারা কলকাতা থেকে ফিরে এসেছেন।
ফেরার আগে দেশটির বিমানবন্দরে ডিবি প্রধান হারুন অর রশীদ গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, আমরা যেসব উদ্দেশ্য নিয়ে কলকাতায় এসেছিলাম, তার শতভাগ সফলতা নিয়ে আমরা বাংলাদেশে ফিরছি।
ডিবি প্রধান বলেন, কলকাতায় খুন হওয়া বাংলাদেশের এমপি আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যাকাণ্ডে ইতোমধ্যে এক নারীসহ তিন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আমরা এক্ষেত্রে ওয়াটার থিওরি ব্যবহার করেছি। আমরা সিআইডি পুলিশকে রিকোয়েস্ট করেছি। আসামিদের ব্যবহৃত কমোড, সেপটিক ট্যাংক চেক করতে বলেছি। সেখান থেকেই মরদেহের অনেক অংশ উদ্ধার হয়েছে। যে উদ্দেশে এসেছিলাম আমরা কিন্তু একশ ভাগ সফলতা নিয়েই বাংলাদেশে ফিরছি।
ডিবির হারুন বলেন, প্রাথমিকভাবে সেপটিক ট্যাংক থেকে উদ্ধার হওয়া মাংস এমপি আনারের মনে করা হলেও এ ব্যাপারে শতভাগ নিশ্চিত হতে ফরেনসিক এবং ডিএনএ টেস্ট জরুরি।আনুষ্ঠানিকভাবে সিআইডিকে চিঠি দিয়ে এসব মাংসের টুকরো বাংলাদেশে নিয়ে যাওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, উদ্ধার করা মাংস এমপি আনারের মরদেহের কি না তা পরীক্ষার জন্য ইতোমধ্যে সেন্ট্রাল ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে (সিএফএসএল) নমুনা পাঠানো হয়েছে। প্রয়োজনে ডিএনএ টেস্টও করা হবে। সেক্ষেত্রে এমপি আনারের কন্যা মুমতারিন ফিরদৌস ডরিনকে কলকাতায় ডাকা হতে পারে।
ডিবিপ্রধান বলেন, আমরা সিআইডিকে অনুরোধ জানিয়েছি এই পরীক্ষাগুলো যেন দ্রুততার সঙ্গে করা হয়। ডিএনএ টেস্ট করার জন্য এমপি আনারের কন্যা ডরিন শিগগির কলকাতা আসবেন। ভারতে আসার জন্য সম্ভবত তিনি ভিসাও পেয়েছেন।
গোয়েন্দা প্রধান বলেন, বাংলাদেশের পেনাল কোডের ৩৬২ এবং ৩৬৪ ধারা অনুযায়ী, লাশ বা লাশের টুকরো, খুনির ঘড়ি বা অন্য কোনো অংশবিশেষ উদ্ধার না হলে মামলা নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে একটু সমস্যা হয়। সে কারণে আমরা এসেছি। আমাদের মূল কাজটি ছিল বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালানো, কলকাতায় যে আসামি গ্রেফতার হয়েছে তাকে নিয়েই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা, পাশাপাশি যে জায়গায় তারা গিয়েছিল সেসব জায়গায় অভিযান চালানো।
তিনি আরও বলেন, এমপি আনারের লাশ বা লাশের টুকরো যাতে পাওয়া যায় সে কারণেই আমরা এই তদন্ত চালিয়েছি। কারণ একটা মামলার নিষ্পত্তি করতে গেলে সুরতহাল, মেডিকেল রিপোর্ট, ভিসেরা রিপোর্ট, আলামতের দরকার হয়। আমাদের কাজ ছিল আসামিদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য কলকাতা পুলিশের সঙ্গে শেয়ার করা এবং উনাদের কাজে সহযোগিতা করা।
‘আমরা মনে করি, আমরা সহযোগিতা করতে পেরেছি এবং যে উদ্দেশ্যে এসেছিলাম যে একদিকে আলামত সংগ্রহ করা, সিআইডিকে সহযোগিতা করা, ডিজিটাল এভিডেন্স নিজে চোখে দেখা, কলকাতায় গ্রেফতার হওয়া জিহাদ হাওলাদারের সঙ্গে কথা বলে আমাদের দেশে গ্রেফতার হওয়া আসামিদের বয়ান মিলিয়ে নেওয়া, কোথায় কোথায় গেছে সেগুলোর খোঁজ-খবর নেওয়া এসব ক্ষেত্রে আমরা শতভাগ সফল হয়েছি’, যোগ করেন ডিবি প্রধান।