সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন নিজ দেশের অভিবাসন নীতির প্রশংসা করেছেন। পাশাপাশি তিনি ভারত, জাপান, রাশিয়া ও চীনকে ‘জেনোফোবিক’ দেশ বলে আখ্যা দিয়েছেন।
এমন মন্তব্যের পর অবশ্য সমালোচনার মুখেও পড়েছেন বাইডেন। তার দাবির প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ভারত।
বাইডেন তার বক্তব্যে জানান, অভিবাসীরাই আমাদের শক্তিশালী করে তোলে। আমাদের প্রচুর শ্রমিক রয়েছে যারা এখানে থাকতে চায় এবং অবদান রাখতে চায়। কিন্তু চীন, রাশিয়া, জাপান ও ভারতের মতো বেশ কয়েকটি দেশ ‘জেনোফোবিয়ার’ কারণে অভিবাসী গ্রহণ করে না।
বাইডেনের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর শনিবার দ্য ইকোনমিক টাইমসকে বলেন, ভারত সবসময়ই বিভিন্ন সমাজের লোকদের জন্য উন্মুক্ত এবং সবাইকে স্বাগত জানায়।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট তার মন্তব্যে আরও অভিযোগ করেন, ভারতের অর্থনীতি দুর্বল হয়ে পড়ছে এবং উন্নতি করছে না। অথচ মার্কিন অর্থনীতির উন্নতি হচ্ছে।
বাইডেনের এই দাবি প্রত্যাখ্যান করে জয়শঙ্কর বলেন, ‘সর্বোপরী, আমাদের অর্থনীতি নষ্ট হচ্ছে না।’
ভারত গত কয়েক বছর ধরে বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল প্রধান অর্থনীতির পাশাপাশি গত বছর পঞ্চম বৃহত্তম বিশ্ব অর্থনীতিতে পরিণত হয়েছে। এমনকি চলতি দশক শেষ হওয়ার আগেই বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হতে চলেছে ভারত৷
এই তথ্যের ওপর ভিত্তি করেই মূলত পাল্টা বিবৃতি দিয়েছেন জয়শঙ্কর।
গত ২ মে বাইডেন বলেন, আমাদের অর্থনীতির বাড়ার কারণ আপনারা জানেন। এর পেছনে আপনাদের মতো আরও অনেকের অবদান রয়েছে। কেনো? কারণ আমরা অভিবাসীদের গ্রহণ করি। আমরা এর পেছনের কারণ খুঁজছি। চিন্তা করুন জাপানের অর্থনীতি কেনো এত খারাপ?
ওয়াশিংটনে একটি তহবিল সংগ্রহ অনুষ্ঠানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদে পুনঃনির্বাচনের প্রচারণায় এসব কথা বলেছেন ট্রাম্প।
‘জেনোফোবিয়া’ দাবির জবাবে জয়শঙ্কর বলেন, ‘ভারত সবসময়ই দেশ হিসেবে অনন্য। আমি বলতে চাই বিশ্ব ইতিহাসে ভারতীয় সমাজ ছিল খুবই উন্মুক্ত। বিভিন্ন সমাজের বিভিন্ন মানুষ ভারতে আসতো।’
হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি কারিন জিন পিয়েরে জোর দিয়ে বলেছেন, রাষ্ট্রপতির মন্তব্যগুলো আমেরিকার অভিবাসী ঐতিহ্য থেকে প্রাপ্ত শক্তির ওপর জোর দেওয়ার একটি বিস্তৃত বার্তার অংশ। বাইডেনের ফোকাস ভারত ও জাপানের মতো দেশগুলোর সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করার দিকে। গত তিন বছরে তার ক্রিয়াকলাপে বিষয়টি স্পষ্ট লক্ষণীয়।
জেনোফোবিয়া বিষয়টি আসলে কী?
অন্য সংস্কৃতি বা দেশের লোকেদের প্রতি ভয় বা ঘৃণা পোষণ করাই মূলত জেনোফোবিয়া। জেনোফোবিয়া শব্দের আলোকে যারা ‘ভিন্ন’ তাদের না বোঝা বা তারা অপরিচিত হওয়া থেকে সৃষ্টি হয়। এই ভয় থাকার কারণে সমাজে মারাত্মক বৈষম্য দেখা দিতে পারে। এমনকি শত্রুতার দিকেও নিয়ে যেতে পারে।
একই সমাজে বিভাজন সৃষ্টি ও মিথষ্ক্রিয়ার অন্তরায় হতে পারে এই জেনোফোবিয়া।