ভারতীয় পণ্য বয়কটের প্রসঙ্গে যে কথা বলা হচ্ছে তাকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের আন্দোলন ও সাধারণ মানুষের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ বলে মনে করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির বেশির ভাগ শীর্ষ নেতা।
এ বিষয়ে বিএনপির নেতাদের ভাষ্য, নানা কারণে সাধারণ মানুষ ভারতের আচরণে ক্ষুব্ধ। তারা সেই ক্ষোভ থেকে ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দিয়েছে। তবে এটি কোনো সংগঠিত আন্দোলন নয়। বরং বলা যায়, এটি একটি সামাজিক আন্দোলন।
বারবার রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকা এবং ভবিষ্যতেও ক্ষমতাপ্রত্যাশী দল হিসেবে বিএনপিকে এই আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হওয়া ঠিক হবে না।
গতকাল মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) গুলশানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভায় ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাকে দলের যুক্ত হওয়া ঠিক হবে কি না, তা নিয়ে আলোচনা শুরু হলে দলটির শীর্ষ কয়েকজন নেতা এই মনোভাব ব্যক্ত করেন।
বৈঠকে উপস্থিত বিএনপির এক নেতা বলেন, অল্প কিছু সময় এ বিয়য়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
গতকালের বৈঠকে মূলত উপজেলা নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ করা উচিত হবে কি হবে না, তা নিয়েই মূলত আলোচনা হয়েছে। এই ইস্যুতে আনুষ্ঠানিক কোনো সিদ্ধান্ত না হলেও দলের মনোভাব হচ্ছে এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার আগের সিদ্ধান্তে অটল থাকা।
এই নেতা বলেন, আগামী বৈঠকে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দলের নেতাকর্মীদের জানানো হবে।
ভারতীয় পণ্য বর্জন নিয়ে মূলত আলোচনার সূত্রপাত দলের জ্যৈষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদের একটি কর্মকাণ্ড নিয়ে।
বিএনপির বৈঠকে এক নেতা প্রশ্ন করেন রিজভীর ভারতীয় পণ্য বর্জনের যে ঘোষণা, তা কি দলীয় সিদ্ধান্তে। আর সিদ্ধান্তে হলে সেটা কোথায় হয়েছে। তবে বৈঠকে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জানান, এ ব্যক্তিগত। দলীয় কোনো সিদ্ধান্ত নয়।
এরপর তিনজন নেতা কেন এই ধরনের আন্দোলনে দল হিসেবে বিএনপির যুক্ত হওয়া উচিত হবে না, সে বিষয়ে কথা বলেন।
তারা বলেন, বিএনপি অনেক বার রাষ্ট্র ক্ষমতায় থেকেছে। ভবিষ্যতেও দলীয় রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসবে। ভারতের ওপর সাধারণ মানুষের ক্ষোভের সঙ্গে দলীয় ভাবে জড়ানোর কোনো কারণ থাকতে পারে না।
তারা জানান, আগামীতে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে তখন প্রতিবেশী দেশটির সঙ্গে সম্পর্ক কীভাবে নিরূপণ হবে।
এ প্রসঙ্গে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘রিজভী তো বলেই দিয়েছেন, এটা (ভারতীয় পণ্য বর্জনে সংহিত প্রকাশ) তাঁর ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত।’