ভারতের উড়িষ্যার বালেশ্বরে দুর্ঘটনার কবলে পড়া করমণ্ডল এক্সপ্রেস ট্রেনটিতে বাংলাদেশিরাও ছিলেন। তবে সেই সংখ্যা ঠিক কত, তা জানা না গেলেও অন্তত ১৫ বাংলাদেশি যাত্রীকে দুর্ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। বাংলাদেশি যাত্রীদের খোঁজ নিতে এরই মধ্যে কলকাতাস্থ বাংলাদেশের উপ-দূতাবাসের তিন সদস্যের একটি দল রওয়ানা হয়েছে উড়িষ্যার পথে।
বাংলাদেশের বহু মানুষ চিকিৎসার জন্য ভারতে যান। তাদের বেশিরভাগই সাধারণত কলকাতা হয়ে চেন্নাই-বেঙ্গালুরুতে যান এই করমণ্ডল এক্সপ্রেস ট্রেনে ছড়ে। ফলে ট্রেনটি দুর্ঘটনায় পতিত হওয়ার খবরে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে বাংলাদেশিদের মধ্যেও। অনেকেই নিকটাত্মীয়দের খোঁজখবর নিতে শুরু করেন। তাদের সুবিধার্থে একটি হটলাইনও চালু করেছে কলকাতাস্থ বাংলাদেশের উপ-দূতাবাস।
দুর্ঘটনাকবলিত ট্রেনটিতে কতজন বাংলাদেশি ছিলেন, তাদের কী অবস্থা তা জানতে ঘটনাস্থলে তিন সদস্যের একটি দল পাঠানো হয়েছে উপ-দূতাবাস থেকে।
এপর্যন্ত মোট ১৫ জন বাংলাদেশি নাগরিককে দুর্ঘটনাকবলিত ট্রেন থেকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানা যায়। তবে সংঘর্ষ হওয়া দুই যাত্রীবাহী ট্রেনে মোট কতজন বাংলাদেশি ছিলেন, তা জানা যায়নি।
বাংলাদেশের ময়মনসিংহের বাসিন্দা মিনাজ উদ্দিন ছিলেন করমণ্ডল এক্সপ্রেসে। চেন্নাই যাচ্ছিলেন চিকিৎসার জন্য। কিন্তু শুক্রবার সন্ধ্যায় ভয়াবহ দুর্ঘটনার সাক্ষী হন তিনি। দুবির্ষহ সেই অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে মিনাজ উদ্দিন বলেন, আমি করমণ্ডল এক্সপ্রেসের বি-৩ কামরায় ছিলাম। এত বড় ট্রেন দুর্ঘটনা আগে কখনো দেখিনি। আমাদের আগের কামরা পুরো দুমড়ে-মুচড়ে গেছে। সেখানে যেসব বাঙালি ছিলেন, তাদের কাউকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
তবে আহতদের মধ্যে দুই বাংলাদেশি নাগরিকের সন্ধান পাওয়া গেছে। তারাও চিকিৎসার জন্য পশ্চিমবঙ্গ থেকে চেন্নাই রওয়ানা হয়েছিলেন। দুর্ঘটনায় দুজনেই মারাত্মকভাবে আহত হন। তাদের উদ্ধার করে উড়িষ্যার বালেশ্বরের ফকির মোহন মেডিকেল কলেজে ভর্তি করা হয়। পরে সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কটকের শ্রীরাম চন্দ্র ভঞ্জ মেডিকেল কলেজে অ্যান্ড হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।
ফকির মোহন মেডিকেল কলেজের অর্থোপেডিক বিভাগের চিকিৎসক টি সুরেশ কুমার গুপ্তা বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ট্রেন দুর্ঘটনায় আহত হয়ে দুই বাংলাদেশি আমাদের এখানে ভর্তি হন। দুজনের শরীরের নিচের অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, ত্বকের অবস্থা ভালো নয়।
যদিও তাদের নাম-পরিচয় এখনো সঠিকভাবে জানা যায়নি। কারণ দুর্ঘটনার পর দুজনেই অচেতন হয়ে পড়েন। তবে তাদের মধ্যে একজন এতটুকু বলতে পেরেছেন, তারা দুজনেই বাংলাদেশের বাসিন্দা।
তবে উড়িষ্যার রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে এখনো এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য জানানো হয়নি।