তিনিই হতে চলেছেন ভারতের প্রথম মুসলিম মহিলা যুদ্ধবিমান চালক। তার নাম সানিয়া মির্জা। নামে মিল থাকলেও তিনি ভারতের অন্যতম তারকা টেনিস খেলোয়াড় সানিয়া মির্জা নন।
এই সানিয়ার সঙ্গে ওই সানিয়ার বিস্তর ফারাক থাকলেও মিল যথেষ্ট। এক জন বিগত দু’দশক ধরে ভারতের নাম উজ্জ্বল করে আসছেন, আর এক জন দেশের নাম উজ্জ্বল করার পথে। তবে প্রথম মুসলমান মহিলা হিসাবে যুদ্ধবিমান চালকের ছাড়পত্র পেয়ে ইতিমধ্যেই তিনি ইতিহাসের পাতায়।
বিমানচালক সানিয়ার জন্য আকাশই সবকিছু। টিভি মেকানিক শহিদ আলির কন্যা সানিয়া ন্যাশনাল ডিফেন্স একাডেমি (এনডিএ) এর পরীক্ষায় সামগ্রিকভাবে ১৪৯তম স্থান পেয়েছেন। এনডিএ এর চলতি বছরের পরীক্ষায় পুরুষ ও মহিলা মিলিয়ে মোট ৪০০টি আসন ছিল। যেখানে মহিলাদের জন্য ১৯টি আসন ছিল এবং ফাইটার পাইলটদের জন্য ছিল মাত্র দু’টি আসন। সানিয়া নিজের যোগ্যতায় এর একটিতে জায়গা করে নিয়েছেন। এই সাফল্যে খুশি তার বাবা-মা এবং স্কুলের শিক্ষকরাও।
দেহাত কোতোয়ালি থানার অন্তর্গত যশোভার নামের একটি ছোট্ট গ্রামের বাসিন্দা সানিয়া। স্থানীয় পণ্ডিত চিন্তামণি দুবে ইন্টার কলেজ থেকে তিনি মাধ্যমিক পাশ করেন। এর পর উচ্চশিক্ষার জন্য তিনি মির্জাপুর শহরের গুরু নানক গার্লস ইন্টার কলেজে ভর্তি হন বলে হিন্দি দৈনিক ‘অমর উজালা’র একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
উত্তরপ্রদেশের দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় জেলার মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করেছিলেন সানিয়া। তিনি বলেন, ‘মহিলা যুদ্ধবিমান চালকদের জন্য মাত্র দু’টি আসন সংরক্ষিত ছিল। প্রথম বারের চেষ্টায় আমি আসন দখল করতে ব্যর্থ হই। তবে, দ্বিতীয় প্রচেষ্টায় আমি সেই যোগ্যতা অর্জন করেছি।ইংরাজিতে ভাল কথা বললেই যে যোগ্য প্রার্থী হিসাবে বেশি কদর পাওয়া যায়, এই ধারণা ভ্রান্ত।’
২৭ ডিসেম্বর মহারাষ্ট্রের পুণে জেলার এনডিএ একাডেমিতে যোগ দেবেন সানিয়া। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে সানিয়াই হবেন ভারতীয় বিমানবাহিনীর (আইএএফ) প্রথম মুসলমান যুদ্ধবিমান চালক।
উত্তরপ্রদেশের মির্জাপুরের বাসিন্দা সানিয়া জানিয়েছেন, যুদ্ধবিমানের চালক হওয়ার জন্য তার অনুপ্রেরণা ছিলেন ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট অবনী চতুর্বেদী। তাকে দেখেই তার যুদ্ধবিমান চালক হওয়ার স্বপ্ন জাগে। দুই সঙ্গী মোহনা সিংহ এবং ভাবনা কান্থের পাশাপাশি অবনী চতুর্বেদীকে ভারতের প্রথম মহিলা যুদ্ধবিমান চালক হিসাবে ঘোষণা করেছিল প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
সানিয়ার মা তবস্সুম মির্জা বলেন, ‘মেয়ে আমাদের এবং পুরো গ্রামের গর্ব। সে প্রথম মুসলিম মহিলা ফাইটার পাইলট হওয়ার স্বপ্ন পূরণ করেছে। ও গ্রামের প্রতিটি মেয়েকে তাদের স্বপ্নপূরণ করতে অনুপ্রাণিত করেছে।’