আরও একবার শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপেছে বাংলাদেশ। শনিবার সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটের দিকে এ ভূমিকম্প অনুভূত হয়। জানা যায়, ৫.৮ মাত্রার এই ভূমিকম্পের কেন্দ্র ছিল বাংলাদেশের কুমিল্লা জেলা।
ভূমিকম্প পরিমাপ করা হয় সিসমোগ্রাফ যন্ত্রের মাধ্যমে। সিসমোগ্রাফে ব্যবহৃত স্কেলের নাম রিখটার স্কেল। রিখটার স্কেলে শূন্য থেকে ১০ পর্যন্ত সংখ্যা রয়েছে। প্রতি এক সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য ভূমিকম্পের উচ্চতর যে মাত্রা প্রকাশিত হয় তা আসলে পূর্ববর্তী সংখ্যার চেয়ে ১০ গুণ বড় এবং বিধ্বংসী হয়।
সারা পৃথিবীতে বছরে গড়ে ছয় হাজার ভূমিকম্প হয়। এগুলোর বেশিরভাগই মৃদু, যেগুলো আমরা টের পাই না। সাধারণত তিন ধরনের ভূমিকম্প হয়ে থাকে—প্রচণ্ড, মাঝারি ও মৃদু। আবার উৎসের গভীরতা অনুসারে ভূমিকম্পকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়—অগভীর, মধ্যবর্তী ও গভীর ভূমিকম্প।
প্রকারভেদ
ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ভূ-পৃষ্ঠের ৭০ কিলোমিটারের মধ্যে হলে অগভীর, ৭০ থেকে ৩০০ কিলোমিটারের মধ্যে হলে মধ্যবর্তী এবং ৩০০ কিলোমিটারের নিচে হলে তাকে গভীর ভূমিকম্প হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ৫-এর বেশি হওয়া মানেই ভয়াবহ দুর্যোগের আশঙ্কা। ভূমিকম্প এক ডিগ্রি বৃদ্ধি পেলে এর মাত্রা ১০ থেকে ৩২ গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা—৫ – ৫.৯৯ মাঝারি, ৬ – ৬.৯৯ তীব্র, ৭ – ৭.৯৯ ভয়াবহ এবং ৮-এর উপর অত্যন্ত ভয়াবহ।
কোন মাত্রা কী বোঝায়
০-১.৯ রিখটার স্কেলে ভূমিকম্প এলে শুধুমাত্র সিসমোগ্রাফ থেকেই তা জানা যায়৷
২-২.৯ রিখটার স্কেলে, ভূমিকম্প হলে হালকা কম্পন অনুভূত হয়৷
৩-৩.৯ রিখটার স্কেলে ভূমিকম্প হলে, কোনও ট্রাক বা লরি নিকট দিয়ে গেলে যেমন লাগে এক্ষেত্রেও তেমনই অনুভূত হয়৷
৪-৪.৯ রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পে দরজা-জানলা ভাঙতে পারে বা দেওয়ালে টাঙানো ফ্রেম পড়ে যেতে পারে৷
৫-৫.৯ রিখটার স্কেলে ভূমিকম্প এলে বাড়ির আসবাব পত্রে ঝাঁকুনি শুরু হতে পারে৷
৬-৬.৯ রিখটার স্কেলে ভূমিকম্প এলে বাড়ির ওপরের তলাগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে৷
৭-৭.৯ রিখটার স্কেলে ভূমিকম্প এলে বাড়ি ভেঙে পড়তে পারে৷ ভূ-গর্ভেও ভয়ঙ্কর ফাটল হতে পারে৷
৮-৮.৯ রিখটার স্কেলে ভূমিকম্প হলে বড় বড় বাড়িসহ বড় ব্রিজ বা সেতুও ভেঙে পড়ে যেতে পারে৷
৯ বা তার বেশি কম্পন হলে ভয়ঙ্কর ক্ষয়ক্ষতি হয়৷ সমুদ্র কাছে থাকলে সুনামিও হতে পারে৷