জেরুজালেমের পবিত্র আল-আকসা মসজিদে নামাজরত মুসল্লিদের উপর আবারও হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি পুলিশ। পবিত্র রমজান মাসেই বুধবার টানা দ্বিতীয় রাতে এই হামলার ঘটনা ঘটল।
এদিকে মুসলিমদের তৃতীয় সর্বোচ্চ ধর্মীয়স্থান আল-আকসা মসজিদে মুসল্লিদের ওপর হামলার ঘটনায় ফিলিস্তিনের সমগ্র পশ্চিমতীরজুড়ে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়, বুধবার গভীর রাতে মসজিদ চত্বরে প্রবেশ করে ইহুদি নিরাপত্তা বাহিনী। প্রায় সাড়ে তিনশ’ মুসল্লিকে সরিয়ে দিতে শুরু করে তাণ্ডব। এ সময় স্টান গ্রেনেড, রাবার বুলেট ছোড়ে তারা। হামলায় ১৪ বছরের এক কিশোর গুলিবিদ্ধ হয়। ইসরায়েলি পুলিশের হামলা ঠেকাতে ইট-পাটকেল ছোড়ে ফিলিস্তিনিরা।
এক বিবৃতিতে তেল আবিব পুলিশ দাবি করে, ইট-পাটকেল, পটকা মসজিদের ভেতর জড়ো করে রেখেছিল। ব্যারিকেড তৈরির চেষ্টা করে তারা। এর প্রেক্ষিতেই এ হামলা চালানো হয়েছেন।
ফিলিস্তিনের দাবি- নামাজ শেষ হওয়ার আগেই মসজিদ প্রাঙ্গণে হামলা চালায় ইসরায়েলি সেনারা। এ সময় মুসল্লিদের সঙ্গে ইসরায়েলি সেনাদের দফায় দফায় সহিংসতা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী ফিরাস আল-দিবস মিডল ইস্ট আইকে বলেন, মুসুল্লিদের নামাজ ত্যাগ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়ার জন্য ইসরায়েলি বাহিনী রাবার বুলেট, টিয়ার গ্যাস ও স্টান গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। সৈন্যরা লোকজনকে ধাওয়া করে, তাদের প্রহার করে।
তিনি বলেন, তারা একটি নতুন বাস্তবতা তৈরী করতে চায়। তারা আল-আকসা মসজিদকে ফিলিস্তিনি শূন্য করতে চায়। বিশেষ করে গতকাল যা হয়েছে, তা বিপর্যয়কর। সহিংসতার মাত্রা ভয়াবহ।
পবিত্র আল-আকসা মসজিদে মুসল্লিদের ওপর হামলার ঘটনায় অধিকৃত পশ্চিম তীরজুড়ে সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। ফিলিস্তিনের ওয়াফা নিউজ এজেন্সি অনুসারে, ইসরায়েলি বাহিনী আল-আকসা প্রাঙ্গণে হামলার পর অধিকৃত পশ্চিম তীরে যে সংঘর্ষ শুরু হয়েছে তাতে কয়েক ডজন ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন।
এদিকে আল-আকসা মসজিদে হামলা ও এর জেরে সৃষ্ট উত্তেজনা নিয়ে আলোচনায় বসছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ। কূটনীতিকদের মতে, আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে সহিংসতা নিয়ে আলোচনার জন্য বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ একটি জরুরি অধিবেশন বসবে।
কূটনীতিকরা বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও চীনের অনুরোধে রুদ্ধদ্বার বৈঠকটি ডাকা হয়েছে।
একদিন আগেও একইভাবে নামাজরত মুসল্লিদের ওপর তাণ্ডব চালায় ইসরায়েলি বাহিনী।
আল জাজিরা বলছে, পবিত্র আল-আকসা মসজিদে সশস্ত্র ইসরায়েলি পুলিশের হামলার অনেক ভিডিও সামনে আসতে শুরু করেছে। এসব ভিডিওতে আগের দিন ভোর রাতে অর্থাৎ প্রথম দফায় হামলার মতো একই ভাবে হামলার দৃশ্য দেখা গেছে। সেসময় ইসরায়েলি পুলিশ লাঠিসোঁটা, টিয়ার গ্যাস, গ্রেনেড এবং ধোঁয়াসৃষ্টিকারী বোমা নিয়ে মসজিদে ঢুকে পড়ে এবং নারীসহ মুসল্লিদের মারধর ও নির্যাতন করে।