গণতন্ত্রকে সমুন্নত রাখার জন্য যতগুলো প্রতিষ্ঠান রয়েছে সবগুলো আওয়ামী লীগ ধ্বংস করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান। তিনি বলেন, একদলীয় শাসন কায়েম করতে গিয়ে তারা পুরো রাষ্ট্র কাঠামোই ধ্বংস করে ফেলেছে। তাদের উৎখাত ব্যতীত দেশে জনগণের শাসন কায়েমের আর কোনো বিকল্প বাকি নেই।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে শুক্রবার বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসসহ সকল নেতৃবৃন্দের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে আয়োজিত আলোচনাসভায় তিনি এসব মন্তব্য করেন।
ঢাকাস্থ বরিশাল বিভাগীয় জাতীয়তাবাদী কেন্দ্রীয় ফোরামের সভাপতি এনামুল হকের সভাপতিত্বে সভায় আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ফরিদা ইয়াসমিন, যুবদলের সাবেক সহ-সভাপতি আজিজুল হাকীম, ঢাকাস্থ বরিশাল বিভাগীয় জাতীয়বাদী কেন্দ্রীয় ফোরামের সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন বাদশা।
সেলিমা রহমানের ভাষ্য, দেশে বেকারত্বের সমস্যা বৃদ্ধি পেয়েছে, শিক্ষিত মানুষজন কর্মসংস্থানের দাবিতে রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন৷ দুর্নীতিগ্রস্ত সরকারের অংশীজনরা দেশের টাকা বাইরে পাচার করছে,বড় বড় প্রকল্পের নামের লুটপাটের মহোৎসব চলছে। জ্বালানি, নিত্যপণ্যসহ সকল কিছুর মূল্যবৃদ্ধির পেছনে এই সরকারের সুবিধাভোগীরা জড়িত। অপশাসন টিকিয়ে রাখতে জনবিচ্ছিন্ন সরকার সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ব্যবহার করছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলেই একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েমের চেষ্টা করে। যতবার আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে ততবার তারা একটি কর্তৃত্ববাদী শাসন কায়েমের চেষ্টা করেছে। রক্ষীবাহিনী চল্লিশ হাজারের বেশি মানুষ হত্যা করেছে, ২০০০-০৬ সাল পর্যন্ত বাসে বোমা হামলা, লগি বৈঠার ঘটনা আপনারা দেখেছেন।
স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে বিএনপির তৃণমূল থেকে উচ্চ পর্যায় পর্যন্ত নেতাকর্মীরা যে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে তাতে আমরা গর্বিত জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, আমাদের নেতাকর্মীরা জেলে অত্যাচার সহ্য করছেন,আমাদের সিনিয়র নেতাদের ডিভিশন দেওয়া হচ্ছে না। এমন প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও যারা সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন, আপনাদের ত্যাগ তিতিক্ষার কথা ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।
বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নাজিম উদ্দিন আলম বলেন,আওয়ামী লীগের রাজনীতি লাশের রাজনীতি।আওয়ামী লীগ তার ফ্যাসিবাদী শাসন ধরে রাখতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করেছে। বাংলাদেশের জন্মলগ্ন থেকেই তারা বিরোধীদের ওপর অত্যাচার অব্যাহত রেখেছে, পত্র-পত্রিকা বন্ধ করেছেন। এখন বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের হত্যার মধ্যে দিয়ে শেখ হাসিনা লাশের রাজনীতি প্রতিষ্ঠিত করেছেন।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ দাবি করে এই দেশ শুধু তারাই স্বাধীন করেছে,অথচ তাদের নেতারাই মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতে পালিয়েছিল। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধের ময়দানে বীরত্বের সাথে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তার আদর্শে অনুপ্রাণীত হয়ে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিকে জোড়দার করতে হবে। প্রহসনের ইভিএম বা যেকোনো ষড়যন্ত্রমূলক নির্বাচনী ব্যবস্থাকে প্রতিহত করার মাধ্যমে বিরাজমান স্বৈরাচারকে প্রতিহত করা হবে।