সারাদেশে গতকাল রোববার অনুষ্ঠিত হয় দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। সন্ধ্যার পর থেকে শুরু হয় ফলাফল ঘোষণা। মুন্সিগঞ্জ-১ (শ্রীনগর ও সিরাজদিখান) আসনের সিরাজদিখান উপজেলায় নৌকার প্রার্থী মহিউদ্দিন আহমদের বিজয়ের পর তার সমর্থকরা করেন মিছিল। সেই বিজয় মিছিল থেকেই এক যুবকের ওপর হামলা চালিয়ে তাঁর বাঁ হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয়েছে।
গতকাল রোববার সন্ধ্যায় মুন্সিগঞ্জ উপজেলার চিত্রকোট ইউনিয়নের খালপাড়া সেতুর ওপর এ হামলার ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, আহত যুবকের নাম মো. নয়ন মিয়া (৩০)। তিনি সিরাজদিখান উপজেলার চিত্রকোট ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মো. জামালের ছেলে।
নয়ন পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। তাঁর স্ত্রী, চার বছরের ছেলে ইয়ামিন এবং তাঁর মা পারভিন বেগমসহ চারজনের সংসার। তিনি আসনটির ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম সারোয়ারের সমর্থক।
আসনটিতে নৌকার প্রার্থী সিরাজদিখান উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও তিনবারের সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন ৯৫ হাজার ৮৬০ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম সারোয়ার পেয়েছেন ৬১ হাজার ৫৪০ ভোট।
ঘটনার বিষয়ে স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পর নৌকার মিছিল বের করে চিত্রকোট ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের লোকজন। মিছিলটি স্থানীয় খালপাড়া সেতু এলাকা অতিক্রম করছিল। এ সময় খালপাড় সেতু দিয়ে পাশের রাজানগর বাজার থেকে বাড়িতে ফিরছিলেন নয়ন। মিছিল থেকে পাঁচ–সাতজন এসে নয়নকে বেদম পেটাতে থাকে। একপর্যায়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে তাঁর বাঁ হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন করে ফেলে।
চিত্রকোট ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শামসুল হুদা (বাবুল) গণমাধ্যমকে বলেন, নয়নের বাড়ি আমার বাড়ির পাশেই। ওদের যেকোনো সুখ-দুঃখে পাশে থাকি। এবার নির্বাচনে আমি ট্রাক প্রতীকের পক্ষে ছিলাম। নয়নও আমার সঙ্গে ছিল।
তিনি বলেন, শুধু ট্রাকের সমর্থন করায় স্থানীয় নুরে আলম, জয়নাল, জয়নালের ছেলে ফাহাদ, আবদুল কাদের, জহিরুল ইসলাম সোহাগ, সাকিবসহ কয়েকজন নয়নের হাত কেটে দিল। হাত কাটার পরে ৩০-৪০ মিনিট তাঁকে সেতুর ওপর ফেলে রেখেছিল। মানুষ কতটা নির্মম হলে এমন কাজ করতে পারে। পরে পুলিশকে খবর দিলে নয়নকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।
সিরাজদিখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মুজাহিদুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ভুক্তভোগী যুবককে ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে। প্রকৃত ঘটনা কী, তার তদন্ত চলছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত যাদের নাম এসেছে, পুলিশ তাদের আটক করতে অভিযান চালাচ্ছে।