চলতি বছরের একুশে পদক পাচ্ছেন ২১ জন। ভাষা আন্দোলন, শিল্পকলা, ভাষা ও সাহিত্যসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে এ পুরস্কার প্রদান করা হয়। তাদের মধ্যে প্রয়াত কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহসহ ছয়জন মরণোত্তর এ সম্মাননা পাচ্ছেন।
এই পদক প্রাপ্তির মধ্য দিয়ে মৃত্যুর ৩৩ বছর পর রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পাচ্ছেন কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ।
মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) ২০২৪ সালের একুশে পদকের জন্য মনোনীতদের নাম ঘোষণা করেছে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ ১৯৫৬ সালের ১৬ অক্টোবর তাঁর জন্ম বরিশাল জেলার আমানতগঞ্জ রেডক্রস হাসপাতালে; যেটা ছিল তাঁরই পিতার কর্মস্থল। তবে তাঁর গ্রামের বাড়ি বাগেরহাটের মোংলা উপজেলার সাহেবের মাঠ গ্রামে।
১৯৭৪ সালে তিনি ঢাকা ওয়েস্ট এন্ড হাইস্কুল থেকে এসএসসি এবং ঢাকা কলেজ থেকে ১৯৭৬ সালে এইচএসসি পাস করেন। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে ভর্তি হন। ছাত্রজীবন থেকে পড়াশোনা, লেখালেখি ছাড়াও রাজনৈতিকভাবে সমান্তরাল ছিল তাঁর সক্রিয়তা।
এ কারণে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের মনোনয়নে ১৯৭৮ সালে তিনি ডাকসু নির্বাচনে অংশ নেন সাহিত্য সম্পাদক পদে। এরপর দেখা যায় পরবর্তী সব রাজনৈতিক আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করতে।
শুধু কবিতা লেখাই নয়, রাজনৈতিক বোধের জায়গায় পৌঁছে তিনি সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে সমানভাবে যুক্ত হন। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট ও জাতীয় কবিতা পরিষদ গঠনের অন্যতম উদ্যোক্তা এবং দ্বিতীয় সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা যুগ্ম সম্পাদক ছিলেন।
তার দুটি কাব্যগ্রন্থ ছাত্রজীবনেই প্রকাশিত হয়। প্রথম বই ‘উপদ্রুত উপকূল’-এর প্রকাশক ছিলেন আহমদ ছফা। ১৯৮০ সালে তিনি অর্জন করেন মুনীর চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার।
তারুণ্য ও সংগ্রামের দীপ্ত প্রতীক এই কবি মাত্র ৩৫ বছরের স্বল্পায়ু জীবনে সাতটি কাব্যগ্রন্থ ছাড়াও গল্প, কাব্যনাট্য এবং ‘ভালো আছি ভালো থেকো’সহ অর্ধশতাধিক গান রচনা করেছেন এবং সুর দিয়েছেন।
নারীবাদী লেখিকা তসলিমা নাসরিনকে তিনি বিয়ে করেছিলেন। কিন্তু পরে উভয়ের সম্মতিতে তাঁদের দাম্পত্যজীবনের অবসান ঘটে।
মাত্র ৩৫ বছর বয়সে ১৯৯১ সালে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।