রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটির নেতৃবৃন্দ নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে নগরীর ডিসির মোড়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে ফুল দিতে গেলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মাঝে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন। আহতদের মধ্যে দুজনকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সর্বশেষ পরিস্থিতি অনুযায়ী ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
সংঘর্ষের ঘটনা নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ চরম বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে পড়ে তড়িঘড়ি বঙ্গবন্ধু ম্যুরালে শ্রদ্ধা নিবেদন করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
দলীয় নেতাকর্মী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত ২৭ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া পরাজিত হন। এই নির্বাচনে তিনি জামানতও হারান।
সিটি নির্বাচনে ভরাডুবির পর গত রবিবার রাতে রংপুর মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
এরপর জেলা আওয়ামী লীগের সায়াদত হোসেন বকুলকে আহ্বায়ক ও মাজেদ আলী বকুলকে যুগ্ম আহ্বায়ক করে দুই সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করা হয়।
মঙ্গলবার বিকালে নবগঠিত নেতৃবৃন্দ রংপুরে অবস্থিত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু ম্যুরালে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে যান। এ সময় ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সমর্থকদের মাঝে আগে ফুল দেওয়া নিয়ে বাগবিতণ্ডার পর হাতাহাতি, ধাক্কাধাক্কি ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
সংঘর্ষের পরিস্থিতিতে নবনির্বাচিত আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ তড়িঘড়ি ফুল দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে দলীয় কার্যালয়ে ফিরে আসেন। আওয়ামী লীগ নেতাদের চলে আসার পরও ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ বঙ্গবন্ধু ম্যুরাল ও জিলা স্কুল মাঠেও ছড়িয়ে পড়ে।
এ ঘটনায় ছাত্রলীগের ১০ নেতাকর্মী আহত হন। এর মধ্যে পীরগাছা উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি আল নাহিয়ান অভিকে গুরুতর অবস্থায় রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি বর্তমানে হাসপাতালের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন আছেন।
সংঘর্ষে আহত আল নাহিয়ান অভি অভিযোগ করেন, নেতৃবৃন্দসহ বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে ফুল দিতে যাওয়ার সময় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা রনির নেতৃত্বে বাধা দেয়। এ সময় তিনি প্রতিবাদ করলে তাকে নির্দয়ভাবে মাথা, বুকসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে উপর্যুপরি লাথি ও ঘুসি মেরে গুরুতর আহত করে। তিনি হাসপাতালে ভর্তি আছেন। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত বিচার দাবি করেন।
জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এবং জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী মেহেদী হাসান রনি বলেন, এখানে কিছু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। বড় ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। আমার প্রতিপক্ষরা ছোট্ট ঘটনাটিকে বড় সাজাতেই এ ঘটনা ঘটিয়েছে। যেহেতু ফুল দিতে প্রচুর নেতাকর্মী জড়ো হয়েছিলেন,সে কারণে সামনে যাওয়ার তাড়া ছিল সবারই।
এরপরই জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ ও নেতাকর্মীরা সরাসরি নগরীর বেতপট্টি এলাকায় জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে আসেন। সেখানে মতবিনিময় সভা করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ইলিয়াছ আহমেদ, মোতাহের হোসেন মওলা, রোজি রহমান, উৎপল সরকারসহ অন্যান্যরা। সভায় নেতৃবৃন্দ জেলা আওয়ামী লীগকে আরও শক্তিশালী করার জন্য একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান।
এ সময় ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় কোনও নেতা মন্তব্য করতে রাজি হননি।