জাতীয় পার্টির (জাপা) থেকে অব্যাহতি পাওয়া সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য মশিউর রহমান রাঙ্গার আপত্তিকর বক্তব্যে ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা মাঠে নেমেছেন। দলের প্রতিষ্ঠাতা হুসাইন মোহাম্মদ এরশাদের ভাই ও বর্তমান চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের বিরুদ্ধে মন্তব্যের জেরে বিক্ষোভ শুরু হয়।
বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে জাপা ঢাকা মহানগর উত্তর আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে রাঙ্গার কুশপুত্তলিকা দাহ করেন তারা। এ সময় নেতারা রাঙ্গাকে তার বক্তব্যের জন্য প্রকাশে ক্ষমা না চাইলে উপযুক্ত শাস্তি দেওয়ারও হুমকি দিয়েছেন।
গত ২৩ অক্টোবর রাজধানীতে রওশন এরশাদপন্থীদের এক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে জি এম কাদেরের বিরুদ্ধে নানা ধরনের বক্তব্য দেন রাঙ্গা। সে সময় রাঙ্গা বলেন, জাতীয় পার্টির বনানী ও কাকরাইল অফিস থেকে তাকে (জি এম কাদের) তাড়িয়ে দেওয়া হবে। তার চেয়ার কেউ রক্ষা করতে পারবে না।
রাঙ্গা তার বক্তব্যে আরও বলেন, জি এম কাদের মনোনয়ন বাণিজ্যের মাধ্যমে সম্ভাব্য প্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা নিচ্ছেন। বিএনপির জোটে যাবেন, সে কথা বলে টাকা নিচ্ছেন, আবার আওয়ামী লীগের সঙ্গে থাকবেন বলেও নিচ্ছেন।
বুধবারের সমাবেশে জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক সফিকুল ইসলাম সেন্টু বলেন, মসিউর রহমান রাঙ্গাকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে। নইলে তাকে উপযুক্ত শিক্ষা দেওয়া হবে। রাঙ্গা যে ভাষায় বক্তৃতা করেছেন, তা আমাদের রুচিতে বাধে। তবে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা নোংরামির জবাব দিতে জানে। জাতীয় পার্টিতে থেকে কেউ দালালি করলে সে কখনো ক্ষমা পাবে না। ষড়যন্ত্রকারীরা ব্যর্থ হবে, গণধোলাইয়ের শিকার হবে।
তিনি বলেন, রাঙ্গার কথাবার্তায় লাগাম নেই। তাই যেখানে রাঙ্গা সেখানেই প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। তার রাজনীতি শেষ করে দিতে হবে। জাতীয় পার্টি শক্তিশালী অবস্থানে আছে বলেই রাঙ্গার নেতৃত্বে জিএম কাদেরের জাতীয় পার্টিকে অপবাদ দেওয়া হচ্ছে। জাতীয় পার্টি আছে এবং থাকবে, আপনারা বিলীন হয়ে যাবেন।
জাপার আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য সাহিদুর রহমান বলেন, জাতীয় পার্টি ঘুরে দাঁড়ালেই ষড়যন্ত্র শুরু হয়। জি এম কাদেরের নেতৃত্বে পার্টি এখন দেশ ও দেশের মানুষের স্বার্থে কথা বলে দেশের মানুষের আস্থা অর্জন করেছে। এ কারণেই একটি কুচক্রী মহল ষড়যন্ত্র শুরু করেছে।
এই নেতা রাঙ্গাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, যারা দালালি করবে, জাতীয় পার্টিতে তাদের জায়গা হবে না। জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা কারো ষড়যন্ত্রে বিভ্রান্ত হবে না।
বুধবারের প্রতিবাদে সভায় আরো বক্তব্য রাখেন জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া ও আলমগীর সিকদার লোটন, ভাইস চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান ও জহিরুল ইসলাম জহির, যুগ্ম মহাসচিব গোলাম মো. রাজু ও সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য নাজমা আক্তার।