তপশিল ঘোষণা হয়ে গেছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের। দলীয় প্রার্থীতা চূড়ান্ত করা শেষ। শুরু হবে নির্বাচনী প্রচারণা। এ নির্বাচনে রাজশাহী জেলায় ৬টি আসনে ৪০ জন প্রার্থীর মধ্যে ১৩ জনই মাধ্যমিক শিক্ষার গণ্ডি পেরোতে পারেননি। এর মধ্যে ৬ জন রয়েছেন স্বশিক্ষিত।
স্বাক্ষরজ্ঞান সম্পন্ন বা স্বশিক্ষিত প্রার্থীরা বলছেন, শিক্ষাগত যোগ্যতা নয় অভিজ্ঞাই তাঁদের মূলশক্তি।
এক্ষেত্রে অন্যভাবে মত দিয়েছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, জাতীয় সংসদে কারা প্রতিনিধিত্ব করবেন। আইন প্রণেতা কারা হবেন, তা ঠিক করতে রাষ্ট্রকে এর মাপকাঠি নির্ধারণ করতে হবে।
দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে রাজশাহী জেলোর ৬টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৪০ জন প্রার্থী।
হলনামায় প্রার্থীদের জমা দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীদের ১৩ জনই মাধ্যমিক শিক্ষার গণ্ডি পেরোতে পারেননি। এর মধ্যে স্বশিক্ষিত ৬ জন। অষ্টম শ্রেণির গণ্ডি পেরিয়েছেন ৪ জন। মাধ্যমিক পাস করেছেন ৩ জন। এছাড়া উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেছে ৬ জন।
সব পরিসংখ্যান মিলিয়ে, শতকারা ৩২ দশমিক ৫ শতাংশ প্রার্থী পেরুতে পারেনি মাধমিকের গণ্ডি।
তবে স্বশিক্ষিত বা স্বাক্ষরজ্ঞান সম্পন্ন প্রার্থীরা বলেছেন, শিক্ষা নয় অভিজ্ঞাই তাঁদের মূলশক্তি। অনেক ক্ষেত্রে শিক্ষিতদের থেকে তাঁরাই দেশের জন্য ভালো কাজ করেন।
স্বশিক্ষিত প্রার্থী সাইফুল ইসলাম স্বপন বলেন, যারা রাজনীতি বা পলিটিক্স করে তাঁরা অনেক ক্ষেত্রে স্বশিক্ষিত হলেও দেশ চালাতে পারে। রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে থাকতে থাকতে এটা প্র্যাকটিস হয়ে গেছে। সংসদে কী বলতে হবে, কী বলতে হবে না আমার মনে হয় শিক্ষিতদের দিক থেকে অশিক্ষিতরাই ভালো বলতে পারবে।’
অপর এক স্বশিক্ষিত প্রার্থী আব্দুল্লাহ আল মাসুদ সিদ্দিকী শিবলী বলেন, ‘রাজনীতির ওপর সাধারণ মানুষের অনীহা। আসলে রাজনীতি তো রাজনীতিবিদদের হাতে নেই। রাজনীতি চলে গেছে রাজনীতিবিদদের বাইরে। রাজনীতিতে মারামারি হানাহানি রয়েছে, যার ফলে ভদ্রলোক এখানে আসতে চায় না।’
রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের ভাষ্য, সংসদে কারা প্রতিনিধিত্ব করবেন তা ঠিক করতে মূল ভূমিকা নিতে হবে ভোটারদের। সেই সঙ্গে জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে প্রার্থীদের ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকা উচিত বলে মত তাঁদের।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. এস এম একরাম উল্যাহ বলেন, ‘প্রথম কথা হচ্ছে রাষ্ট্র আশা করে তার আইন প্রণেতারা শিক্ষিত হবেন। রাষ্ট্রের জনগণের প্রত্যাশা তাঁদের প্রতিনিধিরা শিক্ষিত হবেন। একাডেমিক শিক্ষার পাশাপাশি রাজনৈতিক শিক্ষা থাকাটাও জরুরি। দুটোর সংমিশ্রণে ব্যক্তিটা সর্বোত্তম।
তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রীয় জনগণের জন্য কল্যাণকর আইন তৈরি করতে যিনি নিরক্ষর তিনি কীভাবে আইন তৈরি করবেন। সুতরাং, আমি মনে করি এ ধরনের জনপ্রতিনিধির দ্বারা জনগণ লাভবান হবেন না। এদের কাছ থেকে যথার্থ ভূমিকা আশা করতে পারেন না জনগণ।’
তপশিল অনুযায়ী দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ৭ জানুয়ারি। এবার রাজশাহী জেলার ৬টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৪০ জন প্রার্থী।
রাজশাহীর ৬ আসন মিলিয়ে মোট ভোটার রয়েছেন ২১ লাখ ৭৫ হাজার ৯০৫ জন।