রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুর পরে যুক্তরাজ্যের ভার গ্রহণ করেছেন রাজা তৃতীয় চার্লস। এখন থেকে ব্রিটেনের রাজা হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্তরাজ্যেগুলোর রাষ্ট্রপ্রধান হচ্ছেন তৃতীয় চার্লস। যদিও তার ক্ষমতা অনেকটাই প্রতীকী ও আনুষ্ঠানিক। সেইসাথে রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে রাজনৈতিকভাবে নিরপেক্ষতা রক্ষা করবেন তিনি।
সম্প্রতি রাজার কার্যকলাপ ও দায়িত্ব নিয়ে এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিবিসি। এতে বলা হয়, একটি লাল চামড়ার বাক্সে করে তিনি প্রতিদিন সরকারি বার্তা পাবেন। যেমন আসন্ন কোন গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক নিয়ে ব্রিফিং বা তার সাক্ষর দরকার এমন কোন দলিল। এ বিষয়ে দেশের প্রধানমন্ত্রী সরকারি বিষয়ে রাজাকে অবহিত করতে সাধারণত বুধবার বাকিংহাম প্যালেসে গিয়ে রাজার সাথে সাক্ষাৎ করেন।
তবে এসব বৈঠক একেবারেই গোপনীয় এবং এগুলোতে কে কী বলেন তার কোন রেকর্ড থাকে না। সেইসাথে রাজার দায়িত্বে সংসদীয় বিষয়েও রাজার কিছু কার্যক্রম রয়েছে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
সরকার নিয়োগ: সংসদ নির্বাচনে জয়ী দলের নেতা সাধারণত বাকিংহাম প্যালেসে রাজার সাথে দেখা করেন, যেখানে তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে সরকার গঠনের আমন্ত্রণ জানানো হয়। আবার সংসদ নির্বাচনের আগে রাজাই আনুষ্ঠানিকভাবে একটি সরকার ভেঙ্গে দেন।
স্টেট ওপেনিং এবং রাজার ভাষণ: স্টেট ওপেনিং হলো যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের বার্ষিক সূচনা অধিবেশন। রাজা এই সংসদীয় বর্ষের আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন। হাউজ অব লর্ডসে ভাষণে রাজা সরকারের পরিকল্পনাগুলো তুলে ধরেন।
রাজকীয় সম্মতি: যখন পার্লামেন্টে কোন বিল পাশ হয় সেটাকে আইনে পরিণত করার জন্য রাজার অনুমোদন বা সম্মতির দরকার হয়। যদিও এটি কেবলই আনুষ্ঠানিকতা মাত্র। সবশেষ এই সম্মতি না দেয়ার ঘটনা ঘটেছিল ১৭০৮ সালে।
আনুষ্ঠানিক এসব কাজের বাইরেও বিভিন্ন দেশের সফররত রাষ্ট্রপ্রধানদের আতিথ্য এবং যুক্তরাজ্যভিত্তিক বিদেশি রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনারদের সাক্ষাৎ দেয়ার দায়িত্ব পাবেন রাজা চার্লস। এছাড়াও নভেম্বর মাসে বার্ষিক স্মরণ অনুষ্ঠানে নেতৃত্ব দেবেন তিনি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধসহ বিভিন্ন যুদ্ধ বা সংঘাতে দেশটির নিহতদের স্মরণে এই অনুষ্ঠান হয়।
আইন অনুযায়ী, কমনওয়েলথের প্রধান হন রাজা। এটি ৫৬টি স্বাধীন দেশের ২৪০ কোটি মানুষের একটি সংস্থা। এর মধ্যে ১৪টি দেশের রাষ্ট্রপ্রধানও তিনি। নতুন রাজকীয় ডাকটিকেট ও ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের নোটে মায়ের ছবির জায়গায় এখন রাজা তৃতীয় চার্লসের ছবি প্রতিস্থাপিত হবে। ব্রিটিশ পাসপোর্টের ভিতরে শব্দের পরিবর্তন করে ‘হিজ ম্যাজেস্টি’ লেখা হবে।