স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। একাধিক শারীরিক জটিলতায় ভুগতে থাকা এই চিকিৎসককে বর্তমানে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে।
রবিবার (২১ আগস্ট) সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশীদ আলম।
সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সেব্রিনা ফ্লোরা সুস্থতার জন্য সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন বলে জানান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. খুরশীদ।
ডা. খুরশীদ বলেন, শারীরিক অসুস্থতা ধরা পড়লে গত মাসে ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয় সেব্রিনা ফ্লোরাকে। অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় ১০-১২ দিন আগে তাকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। সেখানেই তার অস্ত্রোপচার হয়।
সেব্রিনা ফ্লোরার অসুস্থতার ধরন সম্পর্কে তিনি বলেন, “অগ্নাশয় এবং পিত্তনালী দুটো একসঙ্গে যুক্ত হয়ে খাদ্যনালীর ভেতরে ঢোকে। এই পিত্তরস এবং অগ্নাশয়ের রস একসঙ্গে খাবারের সঙ্গে মিশে হজমে সাহায্য করে। অগ্নাশয় এবং পিত্তনালীর রস যে পথে আসে তা সরু হয়ে গিয়েছিল। ফলে পিত্ত জমা হয়ে থাকছিল, জন্ডিস হচ্ছিল। আর পিত্তরসে অনেক ব্যাকটেরিয়া থাকে, ফলে কোলানজাইটিস হচ্ছিল। এজন্য ইআরসিপি (ওই মুখটা কেটে বড় করে দেওয়া) করা হয়েছিল। যেন পিত্তরস এবং অগ্নাশয়ের রস যেন বাধাহীনভাবে আসতে পারে।”
”তবে অস্ত্রোপচারের পর সেব্রিনা ফ্লোরার পিত্তনালী ও অগ্নাশয়ে প্রদাহ শুরু হলে তাকে ওই হাসপাতালের এইচডিইউতে নেওয়া হয়। সেখানে ভর্তি থাকা অবস্থায় তার কিডনি বিকল হয়। তখন তাকে ডায়ালাইসিস করতে নিয়ে যাওয়া হয়। এটা করতে গেলে তার হার্টের সমস্যা বেড়ে যায়। হার্ট পাম্প করতে না পারায় তার ফুসফুসে পানি জমে যায়। তাকে এখন ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছে। ”
রোগতত্ত্ববিদ ও গবেষক অধ্যাপক সেব্রিনা কোভিড-১৯ টিকা বিষয়ক জাতীয় কারিগরী কমিটির সভাপতি। তিন বছর আগে কোভিড মহামারি শুরুর পর নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এসে তিনি সারাদেশে পরিচিত মুখ হয়ে ওঠেন।
২০২০ সালে করোনা মহামারি শুরুর সময় তিনি সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) পরিচালক ছিলেন। ২০২০ সালের ১৩ আগস্ট থেকে তিনি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালকের পদে রয়েছেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস করা ডা. সেব্রিনা ফ্লোরা কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচডি ডিগ্রি নেন। কর্মজীবনে বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিল, নিপসমে কাজ করেছেন তিনি।